বন্যা নিয়ে খোঁজখবর নিলেন মন্ত্রী

শিলিগুড়ির জন্য মহকুমাশাসকের দফতরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ফোন নম্বর ০৩৫৩-২৫১০১৬৬। মহকুমা পরিষদকেও কন্ট্রোল রুম খুলতে বলা হয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা টিম আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে রয়েছে। শিলিগুড়িতে সমস্যা হলে এসএসবি’র সহায়তা নেওয়ার কথা জানানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৭ ০৬:১০
Share:

অপেক্ষা: বন্যা পরিস্থিতি বন্ধ ট্রেন চলাচল। এনজেপি স্টেশনে আটকে বিএসএফ জওয়ানেরা। নিজস্ব চিত্র

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার বন্যা পরিস্থিতির খোঁজখবর করে বৈঠক ডেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তৎপর হলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। রবিবার শিলিগুড়ির মৈনাক ট্যুরিস্ট লজে শিলিগুড়ি পুর এলাকা এবং মহকুমা পরিষদের আধিকারিক, পূর্ত দফতর, কৃষি, সেচ, এশিয়ান হাইওয়ে-সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। উত্তরবঙ্গের জেলাশাসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বন্যাপরিস্থিতি পর্যালোচনাও করেন। জানান, আলিপুরদুয়ারের পরিস্থিতি সব চেয়ে খারাপ।

Advertisement

শিলিগুড়ির জন্য মহকুমাশাসকের দফতরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ফোন নম্বর ০৩৫৩-২৫১০১৬৬। মহকুমা পরিষদকেও কন্ট্রোল রুম খুলতে বলা হয়েছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা টিম আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে রয়েছে। শিলিগুড়িতে সমস্যা হলে এসএসবি’র সহায়তা নেওয়ার কথা জানানো হয়।

গৌতম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি থেকেই বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর করে ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন। শনিবার ফোনে আমাকে তিনি উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোয় নজরদারি করতে এবং ব্যবস্থা নিতে বলেন। সেই মতো জেলাশাসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। শিলিগুড়ির পরিস্থিতি নিয়েও বৈঠক করলাম।’’ কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারের পরিস্থিতি সামান্য উন্নতি হলেও দুই দিনাজপুর এবং মালদহে পরিস্থিতি খারাপ বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মন্ত্রী জানান, জেলা স্বাস্থ্য দফতরকেও ওষুধ মজুত রাখতে বলেছেন। জল নামার সময়ে পেটের অসুখ-সহ রোগ ছড়ায়। সাপে কাটার প্রতিষেধকও পর্যাপ্ত রাখতে বলেছেন।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে খবর, আলিপুরদুয়ারে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার মানুষ বিপন্ন। পুরসভার ৯, ১১, ১৫, ১৬, ১৭ এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডগুলো জলবন্দি। শহরের বাইরে বিভিন্ন এলাকাগুলিতে জনজীবন বিপর্যস্ত। ১৬২টি শিবির খুলে ১৫ হাজার মানুষকে আশ্রয়, খাবার দেওয়া হচ্ছে। কোচবিহারে ২ লক্ষ মানুষ বন্যা পরিস্থিতির শিকার। ১ লক্ষ খারাপ অবস্থার মধ্যে। ফালাকাটা-তুফানগঞ্জ রাস্তা, আলিপুরদুয়ারের রাস্তা ভেঙে সড়ক যোগাযোগে সমস্যা হচ্ছে। জলপাইগুড়িতে বিপন্ন ১ লক্ষ ২৪ হাজারের বেশি বাসিন্দা। ৩২০টি ত্রাণ শিবির করা হয়েছিল কোচবিহারে। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ১৫০টি শিবির তোলা হয়েছে। মালদহের হবিবপুরের পরিস্থিতি খারাপ বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মন্ত্রী। চোপড়া-গোয়ালপোখরে বিপন্ন ৩৫ টি গ্রাম এবং ১৪ টি গ্রাম পঞ্চায়েত।

পাহাড়ে রংলি-রংলিয়টে রাস্তা নষ্ট হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়ে রয়েছে। সেগুলি দ্রুত সরাতে বলা হয়েছে। শিলিগুড়ি মহকুমায় বিভিন্ন ব্লকে ৭৫ হাজার মানুষ বিপন্ন। চটহাট, বিধাননগর এলাকা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। শিলিগুড়িতে ১৭০১১ হেক্টর জমির ধান এবং ১৮৫৫ হেক্টরের আনাজ, ৭৭ হেক্টরে আনারস চাষ ক্ষতিগ্রস্ত।

খোঁজ নিয়ে পর্যটনমন্ত্রী জানান, লাইনে জল জমে যাওয়ায় উত্তরবঙ্গের সঙ্গে কলকাতার রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের তরফে ট্রেনে আটকে পড়া যাত্রীদের জন্য জল, শুকনো খাবার পৌঁছে দিতে নির্দেশ দেন তিনি। নিউ জলপাইগুড়ি এলাকার দলের কর্মীদেরও নির্দেশ দেন সাহায্য করতে। নিজেও স্টেশনে গিয়ে বিলি করেন। সড়ক পথে ডালখোলা এবং ‘বেঙ্গল টু বেঙ্গল’ রাস্তা যানজটে আটকে। পুলিশ-প্রশাসনকে তা দেখতে নির্দেশ দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন