দ্বন্দ্ব সরিয়ে রাখুন, দাওয়াই মন্ত্রী অরূপের

বিধানসভা ভোটের আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ভুগছিল তৃণমূল। এমনকী, ভোটে হেরে যাওয়ার পরে প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়া দলের একাধিক নেতানেত্রীর নাম করে কলকাতায় রিপোর্ট পাঠান বলেও তৃণমূল সূত্রের খবর। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়িতে পার্টি অফিসে বসে সেই ‘রোগ’ই দ্রুত সারিয়ে ফেলতে বললেন অরূপ বিশ্বাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৫৬
Share:

মঙ্গলবার দার্জিলিঙে অরূপ বিশ্বাস ও গৌতম দেব। নিজস্ব চিত্র

বিধানসভা ভোটের আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ভুগছিল তৃণমূল। এমনকী, ভোটে হেরে যাওয়ার পরে প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়া দলের একাধিক নেতানেত্রীর নাম করে কলকাতায় রিপোর্ট পাঠান বলেও তৃণমূল সূত্রের খবর। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়িতে পার্টি অফিসে বসে সেই ‘রোগ’ই দ্রুত সারিয়ে ফেলতে বললেন অরূপ বিশ্বাস। একই সঙ্গে শিলিগুড়িতে মানুষের ‘আশীর্বাদ’ পেতে তাদের দৈনন্দিন সমস্যা নিয়েও আন্দোলনের পরামর্শ দেন তিনি।

Advertisement

বিধানসভা ভোটে রাজ্যের সর্বত্র রমরমা হলেও মালদহ ও দার্জিলিং জেলায় তৃণমূল হয়ে গিয়েছিল শূন্য। শুধু তাই নয়, এর আগে শিলিগুড়ি পুরসভা এবং মহকুমা পরিষদও গিয়েছে বামেদের দখলে। লোকসভা ভোটে সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার বিরুদ্ধে হারের পরে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তুলেছিলেন ভাইচুং। বিধানসভায় অশোক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধেও হার মানতে হয় তাঁকে। তখনই আবার গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ ওঠে। তৃণমূল সূত্রের খবর, ভাইচুং যে তালিকা দিয়েছিলেন দলের কাছে, তাতে স্থানীয় কয়েক জন নেতার নামও ছিল। তখনই দলের একটি অংশ দাবি করে, দলাদলির জন্য পুরসভা এবং মহকুমার পরিষদেও হারতে হয়েছে দলকে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, এই সব খবর কানে আশায় উদ্বিগ্ন দলীয় নেতৃত্ব। এ দিন দলের দার্জিলিং জেলার পর্যবেক্ষক ও রাজ্যের মন্ত্রী অরূপবাবুর কথাতেও এই উদ্বেগ ধরা পড়েছে। হিলকার্ট রোডে দলের পার্টি অফিসে জেলা নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। শিলিগুড়িতে দল কেন কর্তৃত্ব করতে পারছে না, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। কেন শিলিগুড়ি পুরসভা, মহকুমা পরিষদ আজও একক ভাবে দখল করার জায়গায় পৌঁছতে পারেনি তৃণমূল, সেই প্রসঙ্গ তুলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সূত্রের খবর, সেখানেই তিনি দ্বন্দ্ব ভুলে মিলেমিশে কাজের উপরে জোর দেন। আজ, বুধবার জেলা কমিটির বৈঠক। এর দু’দিন পরে শুক্রবার জেলা কোর কমিটিকে নিয়ে বসার কথা জেলা সভাপতি গৌতম দেবের।

Advertisement

বিধানসভা ভোটের আগে গৌতমবাবুকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও গত জুন মাসে তাঁকে ফের ওই দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা হয়। গত সপ্তাহে জেলা কমিটির ঘোষণা করা হয়েছে। পুরানো এক দল নেতাকে জেলা কমিটি থেকে সরিয়ে কোর কমিটিতে রাখা হয়েছে। তেমনিই, আদি তৃণমূল বলে পরিচিতদের বিভিন্ন দায়িত্বে বসানো হয়েছে। আবার নতুন কিছু মুখকে জেলা কমিটিতে রাখা হয়েছে। প্রতি মাসে নিয়মিত কমিটির বৈঠক করার নির্দেশ দিয়েছেন অরূপবাবু। এই দুই কমিটির সঙ্গেই এ সপ্তাহে গৌতমবাবু কথা বলবেন।

তার আগে এ দিন গোষ্ঠী কোন্দল সরিয়ে মিলেমিশে কাজ কারার পরামর্শ দিয়েছেন অরূপবাবু। দলীয় সূত্রের খবর, বৈঠকের শুরুতেই শিলিগুড়িতে কী কী আন্দোলন হয়েছে, তা গৌতম দেবে’র কাছ থেকে শুনে গ্রাম-শহরের মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা নিয়ে আরও জোরদার আন্দোলনের পরামর্শ দেন তিনি। তার পরে জেলা সভাপতির নেতৃত্বে সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে বলে পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দেন। কোনও সমস্যা, গোষ্ঠীর বিষয় থাকলে জেলা নেতাদের উপস্থিতিতে তা দ্রুত মিটিয়ে ফেলতে হবে বলেও জানান। আগামী দিনে সমতলের তিনটি বিধানসভায় পৃথক বিশেষ কমিটি গড়ে কাজ করা যায় কি না, তা দেখার জন্য গৌতমবাবুকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আরও জানিয়েছেন, পাহাড়ে তৃণমূল ভোটে লড়বে। তবে একা, নাকি কোনও দলের সঙ্গে জোট হবে, তা নিয়ে অরূপবাবুর বক্তব্য, ‘‘আর কিছু দিনের মধ্যেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন