প্রতীকী ছবি।
বন্যা দুর্গতদের জন্য গাড়ি করে ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার সময় গলায় হাঁসুয়া ঠেকিয়ে একটি সমাজসেবী সংগঠনের সদস্যদের সর্বস্ব নিয়ে পালাল দুষ্কৃতীরা। দুষ্কৃতীদের মুখ গামছায় বাঁধা ছিল। আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে হুমকিও দেয় তারা। শনিবার রাত দু’টো নাগাদ উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখর থানার বেঙ্গল টু বেঙ্গল রাস্তার কালুকা মোড়ের ঘটনা। দুষ্কৃতীরা আধ ঘণ্টায় ১১ জনের দলটির ৩৮ হাজার টাকা, ১১টি মোবাইল ফোন, সোনার ৭টি আংটি ও ২টি গলার মালা নিয়ে পালায়। রাস্তার পাটকাঠির আঁটি ফেলে রাস্তা আটকানো হয়েছিল।
কিছু পরে ঘটনাস্থলের ১ কিলোমিটারের মধ্যে একটি পুলিশের গাড়ি দেখতে পান ওই সংগঠনের সদস্যেরা। তাঁরা অভিযোগ করেন, পুলিশ ঘুরে এসে কিছুই নেই বলে জানায়। তারপরে ওই যুবকদের করণদিঘি বা গোয়ালপোখর থানায় যেতে বলে। সে কথা শুনে রাগে ক্ষোভে ওই সমাজসেবী সংগঠনের কয়েকজন রাস্তায় শুয়ে ক্ষোভ জানান। পরে সংগঠনের যুবকদের রসাখোয়া অবধি নিয়ে গাড়ি খারাপ বলে পুলিশের গাড়িটি চলে যায়। যুবকেরা ভোররাতে করণদিঘি থানায় গেলে আড়াই ঘণ্টা বসিয়ে রেখে নাম, পরিচয়-সহ বিস্তারিত নিয়ে গোয়ালপোখর থানার মামলা বলে জানায়। শেষে ওই সংগঠনের যুবকেরা সোজা রায়গঞ্জে চলে যান। যে সংগঠনের হাতে ত্রাণ তুলে দেওয়ার কথা ছিল, তারা জেলার ত্রাণ কন্ট্রোল রুমে বিষয়টি জানান। কোন থানার ঘটনা তা ঠিক করতেই সকাল হয়ে যায় বলে অভিযোগ।
বেঙ্গল টু বেঙ্গল রোডে বেশি রাতে লুঠের ঘটনা নতুন হয়। ওই রুটে নিয়মিত যাতায়াত করে এমন চালকেরা জানিয়েছেন, যে এলাকায় ঘটনা ঘটে, সেখানে পুলিশের দেখা মেলে না। পুলিশের একাংশের নিষ্ক্রিয়তায় তা বেড়েই চলেছে বলে দাবিতে। শনিবার রাতে মাছ ভর্তি দু’টি ছোট গাড়িতে লুঠপাট হয়েছে বলেও ওই সংগঠনের সদস্যরা জানান। যদিও এমন অভিযোগ নেই বলে পুলিশের দাবি। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘অভিযোগ একটাই পাওয়া গিয়েছে। দু’টি থানার সীমানায় ঘটনাটি। আলাদা তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে থানাগুলিকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
শিলিগুড়ি শহরের বিভিন্ন এলাকার যুবকরা এই সমাজসেবী সংগঠনটি তৈরি করেছেন। ‘জয় বাংলা ফোরাম’ বলে সংগঠনটি দু’টি গাড়ি নিয়ে তারা ‘মানবিক রায়গঞ্জে’র হাতে দুধ, জল, বিস্কুট, চিড়ে গুড়- সহ নানা জিনিসপত্র ত্রাণ হিসাবে দিতে যাচ্ছিলেন।
সংগঠনের পক্ষে সুশান্ত দাস সুমিত সাহা, অনুপ শ্রীবাস্তবেরা জানান, পাটকাঠির স্তূপ পড়েছিল. রাস্তাটি এতটাই সংকীর্ণ যে পাশ দিয়েই গাড়ি যাওয়ার উপায় ছিল না। আরও দু’টি গাড়ি দূরে ধরা হয়েছিল বলে কয়েক জন দেখেন। সামনে ত্রাণের গাড়ির চালকের গলায় প্রথমে ধরা ধরা হয়। পরে পিছনের গাড়িতে হামলা হয়। সকলে বাংলার কথা বলছিল। মুখ ঢাকা, হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল। প্রতিরোধ করলে প্রাণে মারার হুমকি চলে।
ওই সদস্যরা জানান, থানা পুলিশ করতে রাতভর ভোগান্তি হয়।