অবশেষে ক্ষতিপূরণের টাকা পেলেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের অ্যাসিড আক্রান্ত বধূ। বৃহস্পতিবার দিনই মোবাইলে মেসেজ পেয়েছিলেন, শুক্রবার ব্যাঙ্কে খোঁজ নেওয়ার পরে নিশ্চিত হয়েছেন তিনি।
সরকারি নিয়ম মেনেই ওই বধূ তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। দেরিতে হলেও ক্ষতিপূরণ মেলায় এ বার নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন তিনি। অ্যাসিড আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিত্সায় সর্বস্ব খুইয়ে সংসার চালাতে তাঁকে বাজারে সব্জি বিক্রি শুরু করতে হয়। বছর গড়ালেও ক্ষতিপূরণ না মেলায় বধূর অসহায় অবস্থার কথা সপ্তাহখানেক আগে প্রকাশিত হয়েছিল। ওই বধূ কেন ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি, তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন জেলাশাসক। তারপর এক সপ্তাহ গড়াতেই মিলল ক্ষতিপূরণের টাকা। জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী বলেন, ‘‘সব নথিপত্র প্রশাসনের তরফে রাজ্যে পাঠানো হয়েছিল। বরাদ্দ অর্থ আসার পর তা আমরা আক্রান্তের অ্যাকাউন্টে সরাসরি পাঠিয়ে দিয়েছি।’’
গত বছর ৩০ অগস্ট ভোরে স্বামী তাঁর দিকে অ্যাসিড ছুড়ে পালিয়ে যায়। মুখের একাংশ ছাড়াও শরীরের একাধিক জায়াগায় পুড়ে যায় ওই বধূর। ঘটনার পর থেকেই স্বামী অবশ্য জেল হেফাজতে রয়েছে। অ্যাসিড আক্রান্তেরা হাসপাতালে নিখরচায় চিকিত্সা পাবেন বলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু নিজেদের খরচে চিকিত্সা করাতে গিয়ে ঘরদোরও বিক্রি করতে হয়েছে বলে অভিযোগ। তারপর আশ্রয় নিয়েছেন বাপের বাড়িতে। কিন্তু সেখানেও নিত্য অনটন। বছর গড়ালেও সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকা না মেলায় মেয়ের পড়াশোনা ও নিজের খরচ চালাতে এখন বাজারে সব্জি বেচেন তিনি। দোকানে বেচাকেনা হলে একমুঠো খাবার জোটে, নয়তো জোটে না। এ দিনও প্রতিদিনের মতো বাজারে সব্জি বিক্রি করেছেন তিনি। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘চিকিত্সা করাতে গিয়ে ঘরদোর সব গিয়েছে। আশ্রয়ের জন্য একটা বাড়ি করতে গেলে ওই টাকা শেষ হয়ে যাবে। তাই একটা সরকারি কাজ পেলে বাঁচতাম।’’
মানবাধিকার সংগঠন গৌড়বাংলা হিউম্যান রাইটস অ্যাওয়ারনেস সেন্টারের সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় দাস বলেন, ‘‘দেরিতে হলেও অ্যাসিড আক্রান্ত ওই বধূ ক্ষতিপূরণ পেয়েছে জেনে ভাল লাগছে। তবে ও যাতে একটা সরকারি কোনও কাজ পায় সেই দাবিও আমরা জানাচ্ছি।’’