সংসার: পরিযায়ীদের ভিড় কুলিকে। ফাইল চিত্র
অফ সিজনে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে রায়গঞ্জ কুলিক পক্ষিনিবাসে প্রাণী সংরক্ষণকেন্দ্র ও প্রজাপতি পার্ক তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্য ও নিরাপত্তার স্বার্থে পক্ষিনিবাসের সার্বিক পরিকাঠামো উন্নয়ন করার কথাও ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অবশেষে সেই ঘোষণার ১০ মাস পর ওই প্রকল্পের কাজের জন্য রায়গঞ্জের বিভাগীয় বন দফতরকে সাড়ে চার কোটি টাকা বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার।
রাজ্য পর্যটন দফতরের তরফে প্রায় এক সপ্তাহ আগে ওই টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আগেই প্রকল্পের অনুমোদন মিললেও আর্থিক বরাদ্দের অভাবেই আটকে ছিল প্রাণী সংরক্ষণকেন্দ্র ও প্রজাপতি পার্ক তৈরির কাজ। থমকে ছিল পক্ষিনিবাসের সার্বিক পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজও। দ্রুত কাজ শুরুর দাবিতে মার্চ মাসে আন্দোলনে নেমেছিল রায়গঞ্জের বিভিন্ন পরিবেশ ও পশুপ্রেমী সংগঠন।
রায়গঞ্জের বিভাগীয় বনাধিকারিক দ্বীপর্ণকুমার দত্তের দাবি, ‘‘সমস্ত কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এক বছরের মধ্যে প্রাণী সংরক্ষণকেন্দ্র ও প্রজাপতি পার্ক তৈরি করা ছাড়াও পক্ষিনিবাসের সার্বিক পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।’’
প্রতি বছর জুন থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত পক্ষিনিবাসে নাইটহেরন, করমোন্যান্ট, ওপেন বিলস্টক-সহ বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি আসে। ফলে ওই সাত মাস উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা-সহ পড়শি রাজ্য থেকেও লক্ষাধিক পর্যটক পরিযায়ীদের দেখতে পক্ষিনিবাসে ভিড় করে। কিন্তু বাকি পাঁচ মাস পক্ষিনিবাসে পর্যটকদের দেখা মেলে না। বন দফতর ওই পাঁচমাস অফ সিজন ধরে। বন দফতরের দাবি, অফ সিজনে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে পক্ষিনিবাস চত্বরে নীলগাই, হরিণ, খরগোস, সাপ, রঙিন মাছ ও কচ্ছপ সংরক্ষণ কেন্দ্র করা হবে। বিভিন্ন ফুলচাষ করে প্রজাপতি পার্কও তৈরি করা হবে। পাশাপাশি, পক্ষিনিবাস চত্বরের পরিকাঠামো নিয়েও অভিযোগ ছিল পর্যটকদের। পক্ষিনিবাসের পানীয় জল, শৌচাগার ও বিশ্রামের জায়গার উন্নয়ন করা হবে। সঙ্গে নজরমিনার, রাস্তাঘাট ও সীমানা পাঁচিলও তৈরি করা হবে বলে বন দফতরের আশ্বাস।
প্রকল্পের বরাদ্দ আসায় খুশির হাওয়া শহরের বাসিন্দাদের মধ্যে। রায়গঞ্জের বিশিষ্ট পরিবেশবিদ চন্দ্রনারায়ণ সাহা, কৌশিক ভট্টাচার্য ও রায়গঞ্জ পিপল ফর অ্যানিম্যালের সম্পাদক অজয় সাহার দাবি, এই কাজে শহরের পর্যটনে প্রাণের সঞ্চার হবে।