বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে মাত্রাতিরিক্ত দামে প্লেটলেট বিক্রির জেরে রোগীর পরিজনদের নাভিশ্বাস উঠছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি রোগীর জন্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্লেটলেট নিয়ে আসতে বলারও অভিযোগ উঠছে নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে। সে কারণে শহরের চিকিৎসক, বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক এবং নার্সিংহোমগুলোকে ডেকে সতর্ক করল জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
গত বুধবার শিলিগুড়ির নার্সিংহোম, শহরের বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি, ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য। উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আঞ্চলিক ব্লাড ব্যাঙ্কের ডিরেক্টর মৃদুময় দাস, শিলিগুড়ি হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল-সহ চিকিৎসকদের অনেকেই। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘মাত্রাতিরিক্ত প্লেটলেট রোগীর জন্য আনতে বলা হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তা ছাড়া প্লেটলেটের দামও অতিরিক্ত নেওয়া হচ্ছে বলে খবর এসেছে। সে কারণে এসব যাতে না হয় সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত দামে যাতে প্লেটলেট বিক্রি না করা হয় সে জন্যও বলা হয়েছে। অন্যথায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
শহরে ডেঙ্গি পরিস্থিতিতে বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কগুলোতে প্লেটলেট দিতে যাচ্ছেন অনেকেই। অভিযোগ, সেখানে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা করে দাম পড়ছে এক ইউনিট প্লেটলেটের। রক্তদাতা নিয়ে আসতে পারলে সে ক্ষেত্রেও ৭০০ টাকার মতো নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অনেক সময় ডেঙ্গি আক্রান্তদের জন্য চিকিৎসকরা রোগীর পরিবারকে ১৫-২০ ইউনিট প্লেটলেট আনতে বলছেন। বিধান মার্কেটের এক ব্যবসায়ী সম্প্রতি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলে তাঁকে ২০ ইউনিট প্লেটলেট দিতে হয়েছে বলে দাবি। চিকিৎসকদের একাংশের মত, হেমারেজিক ফিভারে প্লেটলেট কমে গেলে সে ক্ষেত্রে বেশি প্লেটলেট দরকার হতে পারে। অন্যান্য ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত প্লেটলেট দেওয়াও ঠিক নয়। সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত প্লেটলেট রোগীর পরিবারকে দিয়ে আনিয়ে কী ব্যবসা করা হচ্ছে, সেটাও খতিয়ে দেখছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
প্রশ্ন উঠেছে স্বাস্থ্য বিভাগের ভূমিকা নিয়ে। বেশি দামে বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে প্লেটলেট বিক্রি হলেও কেন দাম বেঁধে দিচ্ছেন না জেলা স্বাস্থ্য দফতর? প্লেটলেট পরীক্ষার জন্যও অনেক বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা করে নিচ্ছে। শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘অতিরিক্ত প্লেটলেট আনানো হচ্ছে কি না স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এটা দেখা উচিত।’’ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর থেকে জানানো হয়, দাম এখনই বেঁধে দেওয়া হয়নি। তবে বিষয়টি নজরে রাখা হচ্ছে।