জেলার ৬৬ হাজারের বেশি বাড়িতেই হয়নি শৌচাগার

কুয়াশা মাখা ভোরে প্রাতঃকৃত্যের জন্য কেউ ছুটছেন মাঠে, কেউ বা নদী-পুকুরের ধারে। জলপাইগুড়ি জেলার পাঙ্গা, সুটুঙ্গা থেকে লিস, ঘিস, তিস্তার মতো নদী বা গ্রামের পুকুর, বিলের ধার— এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে সর্বত্র। সরকারি রিপোর্টেও ধরা পড়েছে সেই ছবি।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:৩০
Share:

কুয়াশা মাখা ভোরে প্রাতঃকৃত্যের জন্য কেউ ছুটছেন মাঠে, কেউ বা নদী-পুকুরের ধারে। জলপাইগুড়ি জেলার পাঙ্গা, সুটুঙ্গা থেকে লিস, ঘিস, তিস্তার মতো নদী বা গ্রামের পুকুর, বিলের ধার— এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে সর্বত্র। সরকারি রিপোর্টেও ধরা পড়েছে সেই ছবি।
প্রশাসন সূত্রে খবর, জলপাইগুড়ি জেলার ৮০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে যেখানে খোলা মাঠে মলমূত্র ত্যাগ হয় না, অর্থাৎ ‘নির্মল’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে মাত্র ন’টি। সরকারি রিপোর্টেই মেনে নেওয়া হয়েছে, বাকি ৭১টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় খোলা মাঠেই চলছে মলমূত্র ত্যাগ। সরকারি রিপোর্টই বলছে, জেলায় ৬৬ হাজারেরও বেশি বাড়িতে শৌচাগার তৈরির কাজ বাকি। তা নিয়েই ক্ষুব্ধ জেলাশাসক।
প্রশাসন সূত্রের খবর, সম্প্রতি জেলার সব বিডিও-সহ মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সর্বস্তরের আধিকারিকদের ডেকে ক্ষোভ জানিয়েছেন জেলাশাসক শিল্পা গৌরীসারিয়া। বৈঠকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, যে ভাবেই হোক চলতি ডিসেম্বর মাসের মধ্যে জেলার সব ব্লক, সব গ্রাম পঞ্চায়েতে খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগের প্রবণতা রুখতেই হবে। জেলাশাসক বলেন, “জলপাইগুড়ি জেলা নির্মল বাংলা প্রকল্পে খানিকটা পিছিয়ে রয়েছে, এটা ঠিক। পরিসংখ্যান দেখে আমরা বৈঠক করেছি। চলতি ডিসেম্বরের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
নির্মল বাংলা প্রকল্পের দুটি দিক রয়েছে। প্রথমত, খোলা মাঠে মলত্যাগ বন্ধ করা। দ্বিতীয়ত, সব বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করা। ২০১৪ সালে প্রকল্পের শুরু, তারপরে চার বছর কাটলেও জেলায় কেন এখনও প্রায় ৬৬ হাজার ৬০০ বাড়িতে শৌচাগার নেই সেই প্রশ্ন বৈঠকে তুলেছিলেন জেলাশাসক। তবে কেন জেলায় এতদিনও পুরো কাজ হয়নি সেই প্রশ্নে নজরদারির অভাবকেই দায়ী করেছেন সরকারি কর্তারা।
সরকারি নির্দেশ রয়েছে, প্রতিদিন সকালে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে প্রতি পাড়ায় নজরদারি চালাতে হবে। আশপাশের বাসিন্দাদের থেকে খবর নিয়ে কারা মাঠে যাচ্ছেন তাঁদের তালিকা তৈরি করে নজরদারি এবং বোঝানো দুটি কাজই করতে হবে। সেই কাজ শেষ হলে গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাকে নির্মল ঘোষণা করতে পারে। এরপর ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা খতিয়ে দেখে জেলাকে রিপোর্ট দেবেন।
জেলা প্রশাসন তা যাচাই করে দেখে পাকাপাকি ভাবে সেই গ্রাম অথবা ব্লককে নির্মল ঘোষণা করবে। কিন্তু মাত্র ৯টির বেশি গ্রাম পঞ্চায়েতে সেই প্রক্রিয়া শেষ হয়নি জলপাইগুড়িতে।
জেলার এক আধিকারিকের কথায়, “অনেক সময় দেখা যায়, বাড়িতে শৌচাগার থাকলেও অভ্যেসবশত কেউ সকাল বেলায় প্রাতঃকৃত্য করতে নদীর পাড়ে যাচ্ছেন। এই প্রবণতা যদি বন্ধ করে দেওয়া যায়, তবে সকলে শৌচাগার ব্যবহার করবেন। নিজের বাড়িতে শৌচাগার না থাকলে পাশের বাড়ি অথবা সকলের ব্যবহারের জন্য তৈরি করা শৌচাগারে যাবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন