বয়কটের মুখে প্রতিবাদী মা, ছেলে

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার জয়ন্তীর বাজার মাঠে সালিশি সভা বসিয়ে স্থানীয় কিছু মাতব্বর ওই পরিবারকে সামাজিক বয়কটের ফতোয়া দেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মারফত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে সাহায্য চেয়ে গত বুধবার লিখিতভাবে আবেদন জানান ওই যুবক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শামুকতলা শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ১০:৫০
Share:

কোপে: গীতাদেবী ও শুভজ্যোতিবাবু। —নিজস্ব চিত্র।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এলাকার বিভিন্ন অসামাজিক কাজের প্রতিবাদ করায় সামাজিক বয়কটের শিকার হতে হচ্ছে এক যুবক ও তাঁর বিধবা মাকে। আলিপুরদুয়ারের প্রত্যন্ত এলাকা, জয়ন্তীতে রীতিমত সালিশি সভা বসিয়ে সামাজিক বয়কটের ফতোয়া দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় কালচিনি থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন শুভজ্যোতি বসু নামে ওই যুবক। তিনি জানান, গত সোমবার ওই ফতোয়া জারির পর থেকে কোনও দোকানি তাদের কোনও সামগ্রী বিক্রি করছেন না।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার জয়ন্তীর বাজার মাঠে সালিশি সভা বসিয়ে স্থানীয় কিছু মাতব্বর ওই পরিবারকে সামাজিক বয়কটের ফতোয়া দেন। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মারফত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে সাহায্য চেয়ে গত বুধবার লিখিতভাবে আবেদন জানান ওই যুবক। শুভজ্যোতির বাড়ি জয়ন্তীর বাবুপাড়ায়। নিজের বাড়িতে হোম স্টে চালান তিনি। তার মা গীতা দাস বসু অঙ্গনওয়ারি কর্মী। এই ঘটনার পর থেকে পর্যটকদের জন্য খাবার ও অন্যান্য সামগ্রী সংগ্রহ করতে পারছেন না তাঁরা।

শুভজ্যোতি বলেন, “সম্প্রতি এলাকায় বেআইনি কাঠের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় বন দফতর। জয়ন্তী নদী থেকে বোল্ডার তোলাও বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। ওই দুই ঘটনার জন্য আমাকে দায়ী করে আমাকে মারধর করা হয়। আমার মাকেও মারধর করা হয়। কালচিনি থানায় অভিযোগ জানানোর পরও পুলিশ কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’’ তিনি জানান, সামাজিকভাবে তাঁদের বয়কট করা হয়েছে। জলের লাইন কেটে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কোনও দোকান থেকে তাঁদের কোনও জিনিস বিক্রি করা হচ্ছে না। রীতিমত অসহায় হয়ে পড়েছেন তাঁরা। তিনি বলেন, ‘‘এলাকার নিম্ন মানের রাস্তা নির্মাণও এক যুবতীকে ধর্ষণের চেষ্টার বিরুদ্ধে আমি নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। তবে বেআইনি কাঠের বিরুদ্ধে বনদফতরের অভিযান বা বোল্ডার উত্তোলন বন্ধের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। অথচ এর জন্য আমাকে দোষী করা হচ্ছে।’’কালচিনি থানার ওসি লাকপা লামা বলেন, “থানায় দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযুক্তরা পালিয়ে গিয়েছে। তাদের খোঁজ চলছে। সামাজিক বয়কটের বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।”

Advertisement

তৃণমুলের বুথ সভাপতি শেখর ভট্টাচার্য্য বলেন, “সবাই মিলে বসে সমস্যার সমাধান করা উচিত। তবে এলাকার যে কোনও বিষয় চট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় না দেওয়াই ভালো।” পঞ্চায়েত সদস্য কাজল মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা আলোচনা করে এই সমস্যার সমাধান করে দিয়েছি। এর পরেও যাতে কারও কোনও সমস্যা না থাকে তা দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন