বাড়িতে যাই হোক, খোলা মঞ্চে একযোগে নাচতে হবে শাশুড়ি-বৌমাকে। দাদু-দিদা, ঠাকুর্দা-ঠাকুমার সঙ্গে নাচবে নাতি-নাতনিরা। গান গাইবেন শুধু বৃদ্ধৃ-বৃদ্ধারা। আবার শুধু বৃদ্ধাদের নাচের প্রতিযোগিতাও হবে। এমন অভিনব উৎসবের আয়োজন ঘিরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের দিনহাটার শালমারা গ্রামে এখন উদ্দীপনা তুঙ্গে। ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তী উদ্যাপনের পরেই দিনভর ওই সব অনুষ্ঠান করবে মাতৃসেবা উৎসব কমিটি।
ওই কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কমলেশ বর্মন বলেন, ‘‘সংসারে নানা টানাপড়েনের পরেও মিলেমিশে থাকতে হয়। শাশুড়ি-বৌমার মধ্যে নানা ব্যাপারে মতের মিল নাই হতে পারে। কিন্তু, সব কিছুর পরেও একযোগে থাকা যায়। একযোগে নাচ-গান করা যায়। তাতে সম্পর্ক দৃঢ় হয়।’’
উৎসবের মধ্যে রয়েছে সম্প্রীতির সুরও। উৎসবের অন্যতম উদ্যোক্তা মাতৃসেবা মিশনের সভাপতি হলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আফসার আলি। উৎসব কমিটির সভাপতি হলেন নাজিরহাট (২) গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দেবকী বর্মন। সেখানে যোগ দিতে আসার কথা সার্ক কালচারাল সোসাইটির চেয়ারম্যান এ টি এম মমতাজুল করিমেরও। তিনি বাংলাদেশের ঢাকা থেকে যোগ ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসবেন।
মিশন সূত্রের খবর, ৫ বছর আগে একবার এমন উৎসব হলেও পরে নানা কারণে তা বড় আকারে করা যায়নি। এবার আয়োজকরা শালমারা বেসিক স্কুলের মাঠে বেশ বড় করেই করছেন। আয়োজকরা জানান, সম্প্রীতির বাতাবরণে জন্মদাত্রী মা, দেশমাতৃকা ও ধরিত্রী মা-এর সেবা করাই তাঁদের উদ্দেশ্যে। সে জন্য বৃদ্ধ বাবা-মায়েদের নিয়ে উপস্থিত হওয়ার জন্য গ্রামের ঘরে-ঘরে বার্তা দেওয়া হয়েছে। সেখানে চারাগাছ বোনা ও বিলি হবে। সব ধর্ম-সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সৌহার্দ্য বজায় রাখার শপথও করতে হবে বলে জানান তাঁরা।
উদ্যোক্তারা জানান, ওই উৎসবে শালমারা ও লাগোয়া গ্রামের বয়োজেষ্ঠদের সপরিবারে সামিল করতে স্বেচ্ছাসেবীরা ঘরে-ঘরে ঘুরছেন। উদ্যোক্তাদের আশা, সব ঠিক থাকলে শতাধিক প্রবীণকে অনুষ্ঠানে সামিল হবেন। প্রায় একই সংখ্যায় শাশুড়ি-পুত্রবধূও একযোগে নাচের প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষও অভিনব আয়োজনের উদ্যোগে সামিল হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, ‘‘বাড়ি-গ্রাম-রাজ্য কিংবা দেশ, সব জায়গাতেই মিলেমিশে থাকার উপরে জোর দিতে হবে। এ ধরনের অনুষ্ঠান মেলবন্ধনের সুর জোরাল করবে।’’