মোহনের বদলে মৃদুল

২০১৭ সালের জুন মাসে তৃণমূলের জেলা সভাপতি করা হয় চা শ্রমিক নেতা বলে পরিচিত মোহন শর্মাকে।

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৯ ০৫:৪০
Share:

বদলের-পরে: জলপাইগুড়ির পূর্ত দফতরের বাংলোয় তৃণমূলের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে দুই নতুন জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী এবং কৃষ্ণকুমার কল্যাণী। নিজস্ব চিত্র

লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরে এ বার আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের জেলা সভাপতি পরিবর্তন করা হল। মোহন শর্মার বদলে নতুন সভাপতি করা হল মৃদুল গোস্বামীকে। দলের কার্যকরী সভাপতি করা হয়েছে কুমারগ্রামের বিধায়ক জেমস কুজুরকে। সেই সঙ্গে মাত্র ২৬ দিন আগে তৈরি দলের জেলা কমিটিও ভেঙে দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য নেতারা। তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন জলপাইগুড়িতে দলের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের উপস্থিতিতে বৈঠকে আলিপুরদুয়ার জেলার জন্য আলাদা একটি কোর কমিটিও গঠন করা হয়েছে। যে কোর কমিটি আগামী দিনে দলের পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি তৈরি করবে।

Advertisement

২০১৭ সালের জুন মাসে তৃণমূলের জেলা সভাপতি করা হয় চা শ্রমিক নেতা বলে পরিচিত মোহন শর্মাকে। এক বছরের মধ্যেই পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়। মোহনবাবুর নেতৃত্বে আলিপুরদুয়ার জেলায় বড় সাফল্য পায় তৃণমূল। কিন্তু এ বারের লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের কার্যত ভরাডুবি হয়। তৃণমূল সূত্রের খবর, এরপর একাধিকবার সভাপতির পদ থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে আর্জি জানান মোহনবাবু। কিন্তু তাঁর সেই আর্জি খারিজ হয়। এমনকি গত ১০ জুলাই ঘোষণা করা দলের নতুন জেলা কমিটিতেও তাকেই সভাপতি রাখা হয়। এই অবস্থায় তৃণমূলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে, মাত্র ২৭দিনের ব্যবধানে এমন কি ঘটল যে জেলা সভাপতির পদে বদলের পাশাপাশি ভেঙে দেওয়া হল দলের জেলা কমিটিও?

মোহনবাবুর ঘনিষ্ঠ নেতাদের কথায়, তাঁর স্ত্রী খুবই অসুস্থ। মোহনবাবুকে কখনও শিলিগুড়ি তো কখনও চেন্নাই ছুটে বেড়াতে হচ্ছে। আর সে জন্যই মোহনবাবুর আার্জি মেনে নিয়েছে দল। তবে কারও কারও অভিযোগ, মোহনবাবু চা বাগান তৃণমূল মজদুর ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্বেও রয়েছেন। অথচ, এ বারের লোকসভা নির্বাচনে চা বলয়ের ভোট ব্যাঙ্কে ধস নামার পাশাপাশি সেখানকার সংগঠনিক শক্তিও অনেকটাই কমে গিয়েছে। অভিযোগ, তাঁকে জেলা পার্টি অফিসে নিয়মিত পাওয়া যায় না। অভিযোগ, পার্টি অফিসে এলেও কয়ে কজন নেতার বৃত্তে আবদ্ধ থাকতেন তিনি। তাই পরিবর্তন প্রয়োজন ছিল।

Advertisement

মোহনবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘ভোটের হিসাব দেখলেই বোঝা যাবে, চা বাগানে সাংগঠনিক শক্তি বেড়েছে। তা ছাড়া দলের জন্য আমি কী কী করেছি, তা শীর্ষ নেতারাও সবাই জানেন। দল আমার আর্জি মেনে নেওয়ায় ভাল লাগছে। সভাপতি পদে না থাকলেও জেলায় দলকে শক্তিশালী করতে সব রকম চেষ্টা করব।’’

জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূলের সঙ্গে থাকা মৃদুল গোস্বামী বলেন, ‘‘দল যখন যা দায়িত্ব দিয়েছে নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেছি। আগামী দিনেও জেলার তৃণমূল পরিবারের সকলকে সঙ্গে নিয়ে সেই দায়িত্ব পালন করে যাব। নেত্রীর নির্দেশ পালন করে দলকে আরও শক্তিশালী করব।’’

আর নতুন কার্যকরির সভাপতি জেমস কুজুর বলেন, ‘‘দলনেত্রী আমার উপর আস্থা রাখায় আমি খুশি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন