পেশের দিন বাজেট পাশ, ক্ষোভ

পুরবোর্ড গঠনের পরে একই দিনে বাজেট পেশ এবং তা অনুমোদিত হল ইংরেজবাজার পুরসভায়। শুক্রবার এই ঘটনার পরে একই দিনে বাজেট পেশ এবং পাশ করানোর বিরোধিতায় বামফ্রন্ট এবং বিজেপির কাউন্সিলরেরা সভাকক্ষ ত্যাগ করেন। তবে কংগ্রেসের দুই কাউন্সিলর বার হননি। তবে তৃণমূলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এদিনের বৈঠকের পরে বাজেট পাশ হয়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৫ ০২:১৪
Share:

পুরবোর্ড গঠনের পরে একই দিনে বাজেট পেশ এবং তা অনুমোদিত হল ইংরেজবাজার পুরসভায়। শুক্রবার এই ঘটনার পরে একই দিনে বাজেট পেশ এবং পাশ করানোর বিরোধিতায় বামফ্রন্ট এবং বিজেপির কাউন্সিলরেরা সভাকক্ষ ত্যাগ করেন। তবে কংগ্রেসের দুই কাউন্সিলর বার হননি। তবে তৃণমূলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় এদিনের বৈঠকের পরে বাজেট পাশ হয়ে যায়।

Advertisement

বিরোধীদের অভিযোগ, বাজেট পেশ হওয়ার পর কম পক্ষে দু’সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। তারপরে পাশ হয় বাজেট। তবে এখানে অনৈতিক ভাবে একই দিনে পেশ এবং পাশ করল তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড। কারণ বাজেটে অনেক গরমিল রয়েছে। এর বিরোধিতা করে চেয়ারম্যান এবং এক্সিকিউটিভ অফিসারের কাছে চিঠি দিয়েছেন বিরোধী কাউন্সিলররা। জেলাশাসক ও মহকুমাশাসককেও চিঠি দেওয়া হবে বলে জানান তাঁরা। যদিও বিরোধীদের অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা এই পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘সব আইন মেনেই এদিন বাজেট পেশ করা হয়েছে।’’

এদিন দুপুর ২টা নাগাদ ইংরেজবাজার পুরসভার সভাকক্ষে ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরের বাজেট পেশ এবং পাশের বৈঠক ডাকা হয়। পুরসভার ২৯টি আসনের মধ্যে ১৫টি আসন একক ভাবে পেয়ে তৃণমূল বোর্ড গঠন করেন। দলের সব কাউন্সিলরদের ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণবাবু এবং ভাইস চেয়ারম্যান হন তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার। বামেরা পেয়েছিল ৯টি আসন। বিজেপি দখল করেছে তিনটি আসন, কংগ্রেসের হাতে রয়েছে দু’টি। পুরবোর্ড গঠনের দিন কংগ্রেসের কাউন্সিলরেরা ভোটাভুটিতে অংশ নেননি। পরে বিজেপির ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর যোগ দেন তৃণমূলে। এদিন তৃণমূলের ১৬ জন কাউন্সিলর বাজেটকে সমর্থন করেন। সভাকক্ষের মধ্যে হট্টগোল শুরু করে দেন বিরোধী কাউন্সিলররা।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারে ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে ৯৭ কোটি ৫৭ লক্ষ ৬০ হাজার ৭০ টাকার বাজেট তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে বস্তি উন্নয়নের জন্য রয়েছে ৯ কোটি ৫৪ লক্ষ। গত আর্থিক বছরে বাজেট ছিল ৯৩ কোটি ৩১ লক্ষ ২৬ হাজার ১৪৩ টাকা। এবার সেই টাকা বাড়ানো হয়েছে।

বিরোধীদের অভিযোগ, পুর আইনে রয়েছে একই দিনে বাজেট পেশ এবং পাশ করানো যায় না। তাঁদের দাবি, পুর আইনের ৮২ নম্বর ধারায় লেখা রয়েছে বাজেট পেশ করার দুই সপ্তাহ পর অর্থাৎ পনেরো দিনের মধ্যে পাশের সভা ডাকতে হয়। এই সময়ের মধ্যে বাজেট নিয়ে আলোচনা করা যায়। এবার সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। তাই বিরোধীরা কাউন্সিলরেরা একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন চেয়ারম্যান এবং এক্সিকি‌উটিভ অফিসারকে।

এই বিষয়ে বাম সমর্থিত নির্দল কাউন্সিলর নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘চেয়ারম্যান নতুন করে আইন তৈরি করছেন। পুর আইনকে অমান্য করে এদিন শুধু সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় বাজেট পাশ করল তৃণমূল। তাই আমরা এদিন অভিযোগের চিঠি এক্সিকিউটিভ অফিসার এবং চেয়ারম্যানকে দিয়েছি। আমরা মহকুমাশাসক ও জেলাশাসকেও চিঠি দেব।’’ কংগ্রেসের দুই কাউন্সিলর নীরব ছিলেন। বাজেটটি ভুলে ভরা বলে দাবি করেছেন বিজেপির কাউন্সিলর সঞ্জয় শর্মা। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দুর্নীতিতে ভরা এই বাজেট। তাই এক দিনে পেশ এবং পাশ করলেন চেয়ারম্যান। এখানে সাধারণ মানুষের উন্নয়নের জন্য বাজেট তৈরি করা হয়নি।’’

কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা কাউন্সিলর নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি বলেন, ‘‘আমরাও এক দিনে বাজেট পেশ এবং পাশ করার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছি না। তবে মানুষের স্বার্থে আমরা সভাকক্ষ থেকে বার হইনি।’’ পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার প্রশান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘চিঠি পেয়েছি। এর বেশি কিছু আমি বলব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন