ঢাকা: প্লাস্টিকে মুড়ে রাখা হয়েছে কিছু দোকান।
ইংরেজবাজার শহরের এলআইসি মোড়, অথবা মহেশমাটি নেতাজি বাজার বা ৩২০ মোড়—রাস্তার পাশেই মাংস কাটা যেমন চলে, তেমনই সকাল থেকে রাত অবধি মাংস ঝুলিয়ে রেখেই চলে বিক্রি। আগে পুরসভার তরফে মাংস কাটার সময় সিলমোহর পড়ত, সেই পাটও অনেক কাল আগে চুকেছে। সম্প্রতি ভাগাড়-কাণ্ডের পরে ক্রেতারা কবেকার বা কিসের মাংস খাচ্ছেন সে নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় নড়েচড়ে বসেছে ইংরেজবাজার পুরসভা।
পুরসভা সূত্রেই খবর, এখন থেকে প্রকাশ্যে মাংস কাটা যাবে না, পুরসভার সিলমোহর ছাড়া মাংস বিক্রিও করা যাবে না। এই নির্দেশ পৌঁছেছে মাংস বিক্রেতাদের কাছেও। ইতিমধ্যে বিএস রোডের পাশে থাকা কয়েকটি দোকানের মালিকেরা পলিথিন দিয়ে ঢেকে মাংস বিক্রি শুরুও করেছেন। যদিও বেশির ভাগ দোকানেই প্রকাশ্যেই ঝুলছে মাংস।
মালদহের জেলা সদর ইংরেজবাজার শহরের মকদমপুর বাজার, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন বাজার, নেতাজি মার্কেট, ঝলঝলিয়া মার্কেট ও ৩২০ মোড়ের মতো বাজারগুলিতে মাংস কাটার ‘স্লটার হাউজ’ রয়েছে। তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেখানকার চেয়ে অন্তত দশ গুণ বেশি মাংস বিক্রি হয় শহরের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পাশের অস্থায়ী দোকানগুলোয়। রবিবার দিনে পাড়ার মোড়ে মোড়ে প্রকাশ্যেই মাংস কেটে ও ঝুলিয়ে বিক্রি চলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে বেআইনি কারবার চললেও পুরসভার এ নিয়ে হেলদোল নেই।
রামকৃষ্ণপল্লির এক বাসিন্দা নেপালচন্দ্র ঘোষ বলেন, “বেশি সংখ্যায় খাসি কাটা হয় বলে রবিবার করে ৩২০ মোড়েই মাংস কিনতে যাই। কিন্তু কোনটা যে খাসি, আর কোনটা ছাগল তা বোঝার উপায় নেই। বাসি কিনা সেটাও বাঝা দায়। ফলে দোকানিদের উপরে ভরসা করেই কিনতে হয়। আগে পুরসভার সিল থাকত, ফলে তারিখ দেখে কেনা যেত। এখন সে সব নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই।’’
পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, “পুরসভার নিজস্ব ফুড ইন্সপেক্টর নেই। ফলে নজরদারি করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে, পুরসভা থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে ‘স্লটার হাউজ’ ছাড়া মাংস কাটা যাবে না। প্রয়োজনে আরও কয়েকটি ‘স্লটার হাউজ’ তৈরি করা হবে। কাটার সময় পুরসভার সিলমোহরও পড়বে। প্রকাশ্যে মাংস ঝুলিয়ে রেখে বিক্রি করতে দেব না আমরা।’’
এ দিকে বিএসরোডের এক মাংস বিক্রেতা বলেন, ‘‘আমরা স্লটার হাউজে গিয়ে মাংস কেটে আনতে পারি। কিন্তু ভাগাড় কাণ্ডের পর কেউ আর চোখের সামনে মাংস কাটতে না দেখলে তা নিচ্ছেন না। ফলে বাধ্য হয়ে আমাদের রাস্তার পাশেই কাটতে হচ্ছে। এ বিষয়টিও পুরসভার
দেখা উচিত।’’