ঢেঁড়া পিটিয়ে খাজনা আদায় করতেন আগেকার জমিদারেরা। এ বার একই পদ্ধতিতে বকেয়া উদ্ধারে নামছে শিলিগুড়ি পুরসভা। সাধারণ মানুষ তো বটেই, এই ঢেঁড়া তারা বাজাবে কেন্দ্র ও রাজ্যের দফতরগুলির সামনেও।
আর তাতেও যদি রাজ্য সরকার বকেয়া না মেটায়? আগেভাগে তাই হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। বললেন, ‘‘আইনেই রয়েছে পুর-কর না দিলে সম্পত্তি নিলাম করে তা আদায় করা হবে।’’ পরে অবশ্য এই নিয়ে আবার প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আইনে বলা আছে, তাই বলেছি। আর ওরা (রাজ্যের দফতরগুলি) তো টাকা দিয়েই দেয়।’’
শিলিগুড়ির পুর কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকারের দফতরের মধ্যে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার কাছে প্রাপ্য ২ কোটি ৩৮ লক্ষ টাকা। তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাস কর্তৃপক্ষের বকেয়া ৩৮ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা। এসজেডিএ থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ, ডিআই-ফান্ড বাজারের থেকে আড়াই লক্ষ টাকা পাবে পুরসভা। মহানন্দা ব্যারেজের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়রের দুটি অফিসের মধ্যে একটি থেকে ৬৮ লক্ষ এবং অন্যটি থেকে ২৮ লক্ষ টাকা কর মিলবে। এ ছাড়াও বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার দুটি অফিস থেকে ৯৪ লক্ষ ৬১ হাজার এবং ২৮ লক্ষ ৯৭ হাজার টাকা কর পাবেন তাঁরা।
কেন্দ্রীয় সরকারের ডাক ও তার বিভাগের কাছে ১০ লক্ষ, আকাশবাণী কেন্দ্রের কাছে ২৮ লক্ষ ৭৬ হাজার কর বাবদ প্রাপ্য রয়েছে পুরসভার। বকেয়া রয়েছে রেলের বুকিং অফিস, কোয়ার্টারগুলো থেকেও। মেয়রের বক্তব্য, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার সাধারণত পুরকর খাতে দফতরগুলিকে টাকা পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু গত ৭-৮ বছর ধরে এই টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে।
এই কাজে এ বার দফতরগুলির সামনে গিয়ে ঢোল বাজাবে পুরসভা। অশোক বলেন, ‘‘মাইকে ঘোষণা করা হয়েছে। শীঘ্রই সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হবে। তার পরে কর বকেয়া রয়েছে এমন বাড়ি, অফিসে গিয়ে ঢোল বাজাবে পুরসভা।’’ বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘মেয়র বকেয়া আদায় করুন। তবে কেন্দ্র ও রাজ্য থেকে তিনি যে সহায়তা পাচ্ছেন, সেটাও জানান।’’