প্লাস্টিক উদ্ধারে ঘেরাও পুরকর্মীরা

বারবার সতর্ক করেও কাজ হয়নি। উল্টে অভিযানে নেমে পুরকর্মীরা দোকান থেকে প্রায় দেড় কুইন্টাল প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ উদ্ধার করলে তাদের ঘেরাও করে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল ব্যবসায়ীদের একাংশের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১১
Share:

বারবার সতর্ক করেও কাজ হয়নি। উল্টে অভিযানে নেমে পুরকর্মীরা দোকান থেকে প্রায় দেড় কুইন্টাল প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ উদ্ধার করলে তাদের ঘেরাও করে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল ব্যবসায়ীদের একাংশের বিরুদ্ধে। শুক্রবার শিলিগুড়ি থানার উল্টোদিকে কলাহাটি বাজারের ঘটনা। পুরসভার সাফাই বিভাগের এক মহিলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে এ দিন ওই বাজারে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বিরোধী অভিযান হয়।

Advertisement

অভিযোগ, মন্টু সাহা নামে এক ব্যবসায়ীর দোকানে প্রচুর প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ মজুত থাকতে দেখেন পুরকর্মীরা। পুরসভার ওই মহিলা আধিকারিক পারমিতা দত্ত জানান, ওই ব্যবসায়ীকে আগেও সতর্ক করা হয়েছে। তার পরেও তিনি ফের প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগে জিনিস বিক্রি করছেন জেনে অভিযান চালানো হয়। উদ্ধার হওয়া ক্যারিব্যাগ বাজেয়াপ্ত করে ভ্যানে তুলতে গেলে ব্যবসায়ীরা বাধা দেন। ভ্যান থেকে বস্তা ভর্তি ক্যারিব্যাগ নামিয়ে দেন। বাজার কমিটির সম্পাদকও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিলে ওই সমস্ত ক্যারিব্যাগ নিয়ে যেতে দেবেন না বলে জানান। সেখানেই ওই ব্যাগগুলি নষ্ট করতে হবে বলেও দাবি করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ উদ্ধার করা হয়। মন্টুবাবু নিজের ভুল স্বীকার করেন।

পুরসভার সাফাই বিভাগের মেয়র পারিষদ মুকুল সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘যার দোকান থেকে ওই সমস্ত প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানো হবে। তা ছাড়া ব্যবসায়ীদের যারা বাধা দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করা হবে।’’ বাজার কমিটির সম্পাদক মিঠুন সাহা তাঁর বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, ‘‘পুরসভার কাজে আমরা বাধা দিইনি। ওই সমস্ত প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ যাতে এখানেই নষ্ট করে দেওয়া হয় সে কথাই বলা হয়েছে। কেন না আমরা শুনেছি পরে ওই ক্যারিব্যাগ অন্যত্র পাঠানো হয়। তা ছাড়া আমরাও অভিযুক্ত ব্যবসায়ীকে কড়া ভাবে সতর্ক করেছি। এর পর তিনি প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বিক্রি করলে ব্যবসায়ী সমিতি থেকেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব বলে দেওয়া হয়েছে।’’ নিষিদ্ধ প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ চুপিসারে ব্যবহার করার প্রবণতা আটকাতে পুরসভার আরও বেশি তৎপর হওয়া উচিত বলে দাবি করেন বিভিন্ন পরিবেশপ্রেমী সংস্থা এবং বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন লাগোয়া বাজার, বিধান মার্কেটে এখনও চুপিসারে অনেক ব্যবসায়ী প্লাসটিকের ব্যাগ ব্যবহারের চেষ্টা করছে। অথচ পুরসভা কড়া ব্যবস্থা নিতে পারছেন না কেন। যারা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বিক্রি বা খদ্দেরদের দেবেন তাদের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করার মতো কড়া ব্যবস্থা পুর কর্তৃপক্ষ নিচ্ছেন না কেন সেই প্রশ্নও উঠেছে। মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘পুরসভার তরফেই তো অভিযান চালানো হচ্ছে। ধরা হচ্ছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে পুলিশে অভিযোগ জানানো হচ্ছে। অথচ তার পরেও কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হচ্ছে না।’’ তিনি জানান, শহরের বাইরে রয়েছেন। পরিবেশ বিভাগের মেয়র পারিষদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলছেন। ৩ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান সুজয় ঘটকের অভিযোগ, পুরসভা প্লাস্টিকের ক‌্যারিব্যাগ বন্ধ করার অভিনয় করছে। তিনি বলেন, ‘‘এর আগে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে একটি গুদাম থেকে ১৫ টন প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ আটক হয়েছিল। কাউন্সিলর ওই গুদাম মালিকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছিল। অথচ পুরসভা তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারেনি। আসলে পুর কর্তৃপক্ষের একাংশের সঙ্গে প্লাস্টিক লবির যোগসাজশ রয়েছে। তা না হলে অভিযুক্ত দোকান মালিকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হল না কেন? তা ছাড়া তিনি ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা করতেন।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন