সপ্তপদী থেকে মালাবদল, পাশে থাকলেন মতিউররা

মালদহের মানিকচকে একটি হিন্দু পরিবারের শেষকৃত্যে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মালদহের মানিকচকের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। এ বার মালদহেরই চাঁচলের খানপুরে অভাবী হিন্দু পরিবারের মেয়ের বিয়ে দিয়ে ফের সম্প্রীতির নজির গড়লেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কয়েকজনই।

Advertisement

বাপি মজুমদার

চাঁচল শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:০৩
Share:

পাশে: বিয়ের মণ্ডপে প্রতিবেশীরা। নিজস্ব চিত্র

শেষকৃত্য থেকে সাত পাকে ঘোরা। দরিদ্র হিন্দু পরিবারের পাশে বারবারই দাঁড়াচ্ছেন প্রতিবেশী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ।

Advertisement

মালদহের মানিকচকে একটি হিন্দু পরিবারের শেষকৃত্যে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মালদহের মানিকচকের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। এ বার মালদহেরই চাঁচলের খানপুরে অভাবী হিন্দু পরিবারের মেয়ের বিয়ে দিয়ে ফের সম্প্রীতির নজির গড়লেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কয়েকজনই। সরস্বতী চৌধুরী নামে ওই তরুণীর বিয়ের মূল উদ্যোক্তাদের অন্যতম মতিউর রহমান আবার অল ইন্ডিয়া ইমাম কাউন্সিলের জেলা সম্পাদকও। তিনি বলেন, খানপুর মুসলিম প্রধান এলাকা, কয়েকঘর মাত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘সবার আগে আমাদের পরিচয়, আমরা তো মানুষ। তাই সাহায্য করা তো কর্তব্য।’’

নববধূর পোশাক থেকে শুরু করে বরযাত্রীদের খাওয়াদাওয়া, সব কিছুরই আয়োজন হল চাঁদা তুলে। বাজল সানাই। ছাদনাতলায় চার হাত এক করে চোখের জলে বিদায়ও দিলেন তাঁরা।

Advertisement

আরও পড়ুন: মোদীর ভয়ে থমকে লগ্নি, মত মমতার

চাঁচলের মহকুমাশাসক দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মিলেমিশে থাকার আনন্দটাই আলাদা তা তাঁরা বোঝালেন।’’

বৃহস্পতিবার রাতে বিয়ে হয় সরস্বতীর। তার বাবা তেজলাল চৌধুরী ছিলেন স্থানীয় চন্দ্রপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। পেশা ছিল মাছ বিক্রি। আচমকা শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। ছেলেমেয়েদের নিয়ে অথৈ জলে পড়েন স্ত্রী শোভারানিদেবী। মাছ বিক্রি করেই লড়াই চলছে তাঁর। এর মধ্যেই গত বছর মারা যান তেজলালবাবু। আরও অসহায় হয়ে পড়েন শোভারানিদেবী। এরপর প্রতিবেশী মুসলিম বাসিন্দাদের কাছে আশ্বাস পেয়ে পাত্র দেখা শুরু হয়। মালদহের লক্ষ্মীপুরের পাত্র তপন চৌধুরীর পাত্রী পছন্দ হওয়ার পর বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করেন শোভাদেবী। তপন দিনমজুর। মাঝে মধ্যে ভিনরাজ্যেও শ্রমিকের কাজ করেন।

এরপর গত একমাস ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা তোলা শুরু করেন মতিউর রহমান, আবদুল বারি, এমাদুর রহমানরা।

নববধূ সরস্বতীর কথায়, ‘‘আমিও যে কোনওদিন স্বামীর ঘর করতে পারব ভাবিনি। কাকুদের জন্যই তা সম্ভব হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন