বাড়ি ঘিরে ভিড়। —নিজস্ব চিত্র
শোওয়ার ঘরে মিলল স্বামী, স্ত্রী ও তাঁদের সাত বছরের মেয়ের মৃতদেহ। বৃহস্পতিবার সকাল আটটা নাগাদ রায়গঞ্জের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তুলসিপাড়া এলাকায় বিশ্বজিৎ পাল(৩৮), সোমা পাল(৩২) ও সুস্মিতা পাল(৭) এর দেহ উদ্ধার হয়।
এ দিন সকালে বিশ্বজিতবাবুর মা মিনতিদেবী বহু ডাকাডাকি করেও ছেলে ও পুত্রবধূর সাড়া পাননি। এরপর তিনি ঘরের পিছনের জানালায় ধাক্কা মারতেই জানালাটি খুলে যায়। তিনি জানালা দিয়ে ছেলেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিত্কার চেঁচামেচি শুরু করেন। এরপরই পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশিরা ঘরের দরজা ভেঙে মৃতদেহগুলি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন।
ঘর থেকে একটি স্যুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, বিশ্বজিতবাবু তাঁর ঠিকাদারি ব্যবসার জন্য রায়গঞ্জের একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সেই টাকা নিয়মিত শোধ করতে না পারায় সুদ সমেত তাঁর দেনার পরিমাণ লক্ষাধিক টাকাতে গিয়ে দাঁড়ায়। পাওনাদারদের টাকা শোধ করতে না পারার কারণেই তিনি স্ত্রীকে ও মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করে নিজেও আত্মঘাতী হন। রায়গঞ্জ থানার আইসি গৌতম চক্রবর্তী বলেন,‘‘দেনার টাকা মেটাতে না পেরে নাকি পারিবারিক কোনও কারণে বিশ্বজিতবাবু স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করে নিজে আত্মঘাতী হলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
জানা গিয়েছে, আট বছর আগে সোমাদেবীর সঙ্গে বিশ্বজিতবাবুর বিয়ে হয়। তাঁদের একমাত্র মেয়ে শহরের একটি বেসরকারি স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। বিশ্বজিতবাবুর একটি দোকানও রয়েছে। পুলিশের দাবি, দোকান ও ব্যবসা ভাল চলছিল না। সেই কারণেই দেনার দায়ে চরম সিদ্ধান্ত নেন বিশ্বজিতবাবু।
বিশ্বজিতবাবুর বাবা নারায়ণবাবু জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের কর্মী। মা মিনতিদেবী গৃহবধূ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা নানা রোগে ভুগছেন। বিশ্বজিতবাবুর একমাত্র ভাই শুভজিতবাবুও পরিবার নিয়ে ওই বাড়িতে থাকেন। ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক পরিবার।