উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে রিপোর্ট তুলে দিচ্ছেন ন্যাকের প্রতিনিধিরা। — নিজস্ব চিত্র
দায়িত্ব পাওয়ার আড়াই বছর পরেও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য সোমনাথ ঘোষের ‘হনিমুন পিরিয়ড’ শেষ হয়নি বলে কটাক্ষ করলেন ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল (ন্যাক)-এর প্রতিনিধি দলের চেয়ারম্যান আর সি সোবটি। বুধবার পরিদশর্নের পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফারেন্স হলে অফিসার-কর্মীদের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের সামনে ওই মন্তব্য করেন তিনি।
চেয়ারম্যানের কথায়, ‘‘উপাচার্যরা কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন যোগ দেন তখন বছরখানেক মধুচন্দ্রিমা পর্ব চলে। ছাত্র-শিক্ষক-আধিকারিকরা তখন সাহায্য করেন। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য আড়াই বছর পার করে দিলেও তাঁর হনিমুন-পর্ব শেষ হয়নি। সেটা কেটে গেলে উপাচার্যকে অনেক কিছু কথাই শুনতে হতে পারে। কতদিন আর সেটা থাকবে আমি জানি না। তবে তিনি যেন সকলকে নিয়ে চলতেই সচেষ্ট হন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এই এলাকায় যে সম্পদ, সংস্কৃতি রয়েছে আমরা কোনও কারণে সে কথা ভুলে গিয়েছি। গবেষণার কাজে তা কাজে লাগিয়ে আমাদের কিছু করতেই হবে।’’
সোমবার থেকে তিন দিন ধরে পরিদর্শন হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। সূত্রের খবর, সেখানে ন্যাকের কাছে অভিযোগ যায়, গত আড়াই বছরে তেমন উল্লেখযোগ্য গবেষণার কাজকর্ম হয়নি। এমনকী, বেশির ভাগ সময় উপাচার্য কলকাতায় বসে থাকেন বলেও কয়েকজন আক্ষেপ করেছেন বলে ন্যাক ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রেই জানা গিয়েছে। সাধারণত, উপাচার্য নিয়োগের পরে গোড়ার দিকে বছরখানেক পরিস্থিতি বুঝে পুরোদমে কাজে নামতে বছরখানেক সময় লেগে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অফিসার জানান, ন্যাকের প্রতিনিধিরা সেটা মনে করিয়ে উপাচার্যের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছেন। উপাচার্য বলেন, ‘‘এখন কিছু বলব না।’’
সোমবার পরিদর্শনের প্রথম দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম নিয়ে প্রতিনিধি দলের কাছে কর্তৃপক্ষের উপস্থাপনায় যে তাঁরা খুশি ছিলেন না, সে কথা এ দিন নিজেরাই জানিয়েছেন। ওই উপস্থাপনা করতে হয় উপাচার্য এবং ডিনদের। ন্যাকের প্রতিনিধি দলের চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘প্রথম দিন শুরুতে তথ্য পরিসংখ্যান যে ভাবে উপস্থাপনা হয়েছে তা খুবই খারাপ। কৃত্রিম ভাবে কিছু দেখানোর চেষ্টা ঠিক নয়। বিষয়টি আমাদের কাছে বেদনাদায়ক।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মীদের একাংশের মতে পরিদশর্ক দলের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ গত দু’দিনে যেভাবে ঘুরেছেন উপাচার্য গত আড়াই বছরেও সেভাবে ঘোরেননি। এখনও অনেক দফতরে তাঁর পা পড়েনি। প্রতিনিধি দলের কাছে বিভিন্ন তথ্য পরিসংখ্যান দিতে সে কারণেই তাঁকে হোঁচট খেতে হয়েছে। ২০০৬ সালে শেষ বার ন্যাকের পরিদর্শনের পর এই বিশ্ববিদ্যালয় ‘বি প্লাস প্লাস’ মান পেয়েছিল। সেই মান ধরা থাকবে কি না সেটাই এখন উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। উপাচার্য সোমনাথ ঘোষের হাতে সিল করা রিপোর্ট এ দিন তুলে দিয়েছেন ন্যাকের প্রতিনিধি দলের চেয়ারম্যান। তবে ১৮ ডিসেম্বরের পর তাঁরা ওয়েবসাইটে তা জানালে এই রিপোর্ট খুলতে পারবেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ন্যাকের মত
• যা ঠিকঠাক হচ্ছে না
গবেষণা, উদ্ভাবনী কাজে উত্তরবঙ্গের পুরনো সংস্কৃতি, কৃষ্টি ধরে রাখা
গ্রন্থাগারের উন্নয়ন
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো ও পরিষেবা
হস্টেল এবং ক্যান্টিন ব্যবস্থা কর্মী, আধিকারিকদের কোয়ার্টার
প্রশাসনিক কাজে স্বচ্ছতা
প্রশাসনের আধিকারিকদের উপস্থাপনা
স্পোর্টস বোর্ডের কাজ
• প্রশংসা পেয়েছে
ক্যাম্পাসে সবুজায়ন রক্ষা
উদ্ভিদবিদ্যার কাজকর্ম
বায়োটেকনোলজি বিভাগ
আইন বিভাগ
হিমালয়ান স্টাডি সেন্টার
মাইক্রোবায়োলজি
অ্যানথ্রোপোলজি