ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়
সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে রবিবার ফের থানায় প্রতারণা ও তথ্য বিকৃতির অভিযোগ দায়ের করলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের তরুণী। পাশাপাশি সাংসদের বান্ধবীর বিরুদ্ধেও সিআইডির কাছে তথ্য গোপন করার অভিযোগ দায়ের করেছেন।
গত ৩ অক্টোবর বালুরঘাটের জেলা আদালত থেকে ঋতব্রত ধর্ষণে অভিযোগের মামলায় আগাম জামিন পেয়েছেন। তার পর থেকে মোবাইলে তাকে হুমকি ও অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করা হচ্ছে বলে এদিন সিআইডির উদ্দেশ্যে বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই তরুণী। সাংসদ ঋতব্রতর বিরুদ্ধে গত ১০ অক্টোবর বালুরঘাট থানায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওই তরুণী। মামলাটির দায়িত্ব পেয়ে ইতিমধ্যে সিআইডি তদন্তে নেমে ঋতব্রতর বান্ধবী এবং সদ্য বিজেপির সঙ্গে যুক্ত মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ এক মহিলা চিকিৎসককে একপ্রস্থ জেরা করেছে। মূল অভিযুক্ত সাংসদ ঋতব্রতকে সিআইডি ডেকে পাঠালেও তিনি এখনও ভবানী ভবনে হাজির হননি বলে অভিযোগ। তাঁর হয়ে সিআইডির কাছে সময় চাওয়া হয়েছে বলে ঋতব্রতর আইনজীবীদের দাবি।
ইতিমধ্যে তিন সপ্তাহের মধ্যে ঋতব্রতকে বালুরঘাটের সিজেএম আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা বিচারক সুদেব মিত্র। ঋতব্রত জামিন পাওয়ার দিন বিকেল থেকে তাঁকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে ওই তরুণী এ দিন ফের সাংসদ এবং তাঁর বান্ধবীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ দিন, সাংসদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগে বালুরঘাটের বাসিন্দা ওই তরুণী উল্লেখ করেন, ঋতব্রত ট্যুইটারে তার মোবাইল নম্বর রেখে দেওয়ায়, তা জেনে বিভিন্ন অচেনা নম্বর থেকে তাঁর কাছে হুমকি ফোন আসছে। এমন কী ঋতব্রত জামিন হয়ে যাওয়ায় ফোনে অশ্লীল মন্তব্য ও গালাগালি করে তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মুকুলবাবু তাঁদের সঙ্গে আছেন বলে জানিয়ে ক্রমাগত শালানো হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগে তিনি আরও জানান, আগাম জামিনের দিন আদালতে ঋতব্রতর আইনজীবীরা তাঁর বিরুদ্ধে ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করার অসম্পূর্ণ তথ্য দাখিল করে বিষয়ের দিক ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফলে ঋতব্রতর আগাম জামিন অবিলম্বে বাতিলের দাবি তুলেছেন ওই তরুণী।
ঋতব্রত কোথায় আছেন, জেনেও তার বান্ধবী সিআইডিকে জেরায় ভুল তথ্য দিয়ে বিষয়টি চেপে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন ওই তরুণী। তাঁর দাবি, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগকে হাল্কা দেখাতে শীঘ্রই ঋতব্রতের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হচ্ছে বলে সাংসদের বান্ধবী সিআইডিকে জানিয়ে ঘটনার মোড় ঘোরানোর চেষ্টা করেছেন। এ ক্ষেত্রে সাংসদের বান্ধবীর বিরুদ্ধে কেন ভারতীয় দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় মামলা দায়ের হবে না, প্রশ্ন তুলেছেন বালুরঘাটের তরুণী।
ঋতব্রতর পক্ষের আইনজীবীরা তরুণীর তোলা অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সাংসদের আগাম জামিন মঞ্জুর হওয়ায় ব্যাকফুটে পড়ে যাওয়ায় ওই তরুণী ফের থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।