ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহবাস কাণ্ডে এ বার মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করল পুলিশ। বালুরঘাটের যে তরুণী এর আগে ঋতব্রতর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন, তাঁরই লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৯৫এ, ২১৪, ৫০৬, ১২০বি এবং ২১৪ নম্বর ধারায় ওই মামলা রুজু করেছে। একই সঙ্গে ঋতব্রত ও দুই মহিলার নামও জড়িয়েছে ওই মামলায়।
বালুরঘাটের ওই তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে রুজু করা জামিন অযোগ্য ধারার ওই মামলাগুলির তদন্তভার বুধবার রাতেই সিআইডির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এর পরেই সিআইডির একটি দল বালুরঘাটে ওই তরুণীর সঙ্গে কথা বলে। তাঁর নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মুকুলবাবুর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় সেই পরিচিতি কাজে লাগিয়ে অর্চনা মজুমদার মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নম্রতাকে ৮ লক্ষ টাকার প্রলোভন দেন বলে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ভয় দেখিয়ে মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ার জন্য চাপ, ধর্ষণের হুমকি দিয়ে মামলা তোলার জন্য একাধিকবার তরুণীকে ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মুকুল রায় সহ মোট ৪ জনের বিরুদ্ধে ওই পাঁচটি ধারায় পুলিশ মামলা দায়ের করেছে।
মুকুল রায় এ দিন কলকাতায় বলেন, ‘‘আমি ওকে চিনি না। কোনও দিন দেখিনি। এখন এমন অনেক কিছুই হবে।’’ মুকুলবাবুর দাবি, ওঁর পুরনো দল ভয় পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে এমন অনেক কিছুই করবে।
মুকুলবাবুর সঙ্গে সহমত বালুরঘাটের অনেকেই। এক আইনজীবীর কথায়, ‘‘কে মুকুল রায়ের নাম করে ওই তরুণীকে হুমকি দিলেন, আর তাতেই পুলিশ মুকুলবাবুর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে দিলেন? আসলে রাজনীতির খেলা সামনে এসে পড়েছে।’’ ঋতব্রতর পক্ষের এক আইনজীবীর বক্তব্য, ‘‘সকলে বুঝতে পারছেন, কী চলছে।’’
এ দিন নম্রতা অভিযোগ করেন, ‘‘ঋতব্রত সিআইজি-র জেরায় সহবাসের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। আবার আরও এক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছিলেন।’’ মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ঋতব্রতর বিয়ে স্থগিত রাখতে পুলিশের কাছে আবেদন করেছেন বালুরঘাটের ওই তরুণী।
এ দিন কলকাতার গরফা থানায় বালুরঘাটের ওই তরুণীর বিরুদ্ধে পাল্টা হুমকি ও চাপ সৃষ্টির অভিযোগ দায়ের করেছেন ঋতব্রত। বালুরঘাট থেকে ফোন করে তাঁকে শাসানো হচ্ছে বলে ঋতব্রতর অভিযোগ।