Nepal

ব্যস্ত রয়েছে নেপাল পোস্ট

আপাতদৃষ্টিতে সীমান্তে সে সব কিছুই দেখা যাবে না। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা নিরাপত্তার সঙ্গে সঙ্গে যেন এলাকাবাসীর মানসিক চাপ বাড়িয়ে তুলেছে কয়েকগুণ।

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

পানিট্যাঙ্কি শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২০ ০৭:১৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

মেচি নদী সেতুর কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই ক্যামেরা দেখে সচেতন হলেন সশস্ত্র সীমা বলের (এসএসবি) আধিকারিক। সাবধান করলেন, সেতুর ছবি তোলা যাবে না। বেশিক্ষণ সীমান্তে দাঁড়ানোও যাবে না। ভারত-নেপাল সীমান্তে অন্যতম চেকপোস্ট পানিট্যাঙ্কির শেষ প্রান্তে নদীই আলাদা করেছে দুই দেশকে। যোগসূত্র সেতু। কিন্তু এই সর্তকতা তো ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত চৌকিগুলিতেই বেশি দেখা যায়। তা হলে কি উত্তেজনার পারদ এখানেও চড়তে শুরু করল?

Advertisement

আপাতদৃষ্টিতে সীমান্তে সে সব কিছুই দেখা যাবে না। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা নিরাপত্তার সঙ্গে সঙ্গে যেন এলাকাবাসীর মানসিক চাপ বাড়িয়ে তুলেছে কয়েকগুণ। ভারতের লিপুলেখ গিরিপথের কালাপানি অঞ্চল নিজেদের মানচিত্রে দেখিয়েছে নেপাল। ঠিক তার পরেই পানিট্যাঙ্কি সীমান্তের ওপারে কাঁকরভিটায় নতুন মানচিত্রকে স্বাগত জানিয়ে মোমবাতি মিছিল করেছিলেন নেপালি নাগরিকরা। ২১ মে-র ওই ঘটনার পর থেকেই পানিট্যাঙ্কি-কাঁকরভিটার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে কোথাও একটা যেন একটা চোরা ফাটল, যা খালি চোখে না দেখেও বোঝা যায়।

যদিও নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা স্বীকার করতে চাননি এসএসবি কর্তারা। বাহিনীর উত্তরবঙ্গের আইজি শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায় জানান, গত বছরের গোড়ার দিকে সান্দাকফু এলাকায় ভারতের সীমানায় কিছু নেপালি জাতীয় পতাকা পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘সেগুলি তুলে ফেলা হয়েছে। তার পর থেকে কোনও গোলমাল বা উত্তেজনাও এই এলাকায় নেই। এখনও বন্ধুত্বের সম্পর্কই দু’দেশের বাহিনীর মধ্যে।’’

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে নেপালের সীমান্ত প্রায় ৯৬ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে। ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের চুক্তি হয়েছিল বলে দুই দেশের মধ্যে কোনও কাঁটাতারের বেড়া নেই। নদীর মাঝ বরাবর কিছু সাদা পিলার রয়েছে, ভাল করে ঠাহর করলে বোঝা যায়। কর্তারা স্বীকার না করলেও সশস্ত্র সীমা বল সূত্রে খবর, এলাকায় নজরদারি আরও কড়া হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় লোক বাড়ানো হচ্ছে। যদিও এলাকায় কোনও উত্তেজনা নেই বলেই দাবি সূত্রের।

দুই দেশের ব্যবসায়িক সম্পর্কে পানিট্যাঙ্কির গুরুত্ব অনেকটা। নদীর ওপারে কাঁকরভিটা ছাড়িয়ে ঝাপা জেলার অনেক গ্রাহক পানিট্যাঙ্কি বাজারে নিয়মিতভাবে জিনিস কিনতে আসেন। যদিও এখন সংক্রমণের জন্য সীমান্তে মানুষ চলাচল বন্ধ। স্থলবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক ব্যবসাপথ খোলা। চলাচল করছে প্রচুর ট্রাক।

সরকারি সূত্রের দাবি, নেপালের বাসিন্দারাও ভারতীয় সেনায় কর্মরত। ভারত-চিন সংঘর্ষের পর ছুটিতে থাকা ভারতীয় সেনার নেপালি জওয়ানরা গোর্খা রেজিমেন্টে ফিরছেন পানিট্যাঙ্কি দিয়েই। মেচির তীরে তাঁদের নিতে আসা সেনা ট্রাকের চলাচল অব্যাহত। যা দেখে নকশালবাড়ির বাসিন্দা পাপ্পু শীল বলেন, ‘‘এমনিতেই করোনার জন্য ব্যবসায় মন্দা। এখন আবার দুই দেশের মধ্যে কী সব গোলমাল চলছে। চিন্তায় রয়েছি।’’ এই চিন্তা অনেক গ্রামবাসীর মনেই উঁকি মারছে। যদিও দার্জিলিং জেলা পুলিশে সুপার অমরনাথ কে বলেন, ‘‘কালাপানির ঘটনায় নেপাল সীমান্তের থানা এলাকাগুলিতে কোনও অশান্তির আঁচ নেই। নজরদারি রয়েছে। নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন