এটিএমে প্রতারণায় নতুন ফাঁদ

বুধবার উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির টুঙ্গিদিঘিতে পুলিশ ওই এটিএম বুথটি বন্ধ রেখে তদন্ত শুরু করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

করণদিঘি শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৪৩
Share:

ফাঁদ: এ ভাবেই এটিএমে প্রতারণা। টুঙ্গিদিঘিতে। নিজস্ব চিত্র

টাকা বেরোনোর আওয়াজও পেয়েছেন। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা যে দেওয়া হয়েছে, সে খবরও সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলে চলে এসেছে। কিন্তু টাকা কই! এটিএম যন্ত্রের সামনে দাঁড়িয়ে মাথা চাপড়াচ্ছিলেন এক যুবক। অনেক পরে বোঝা গেল, এটিএম মেশিনে অভিনব জালিয়াতি করা হয়েছে। আর তার কায়দা দেখে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশ থেকে শুরু করে এলাকার মানুষের।

Advertisement

বুধবার উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির টুঙ্গিদিঘিতে পুলিশ ওই এটিএম বুথটি বন্ধ রেখে তদন্ত শুরু করেছে।

কিভাবে চলে এই জালিয়াতি?

Advertisement

তদন্তকারী এক পুলিশ অফিসার জানান, এটিএম যন্ত্রের যেখান থেকে টাকা বেরোয়, সেখানে একটি ছোট বাক্স ঢুকিয়ে রাখা হয়েছিল। তাই যন্ত্র দিয়ে টাকা বেরোনোর পরে তা গিয়ে পড়ছিল ওই বাক্সে। গ্রাহক তার সন্ধান পাচ্ছিল না। গ্রাহক ভাবছিল, যন্ত্র থেকে টাকা বেরোয়নি।

পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যায় টাকা তুলতে গিয়ে শত্রুঘ্ন সিংহ নামে এক গ্রাহক এই প্রতারণার ফাঁদে পরে নিজেই উন্মোচন করেন তার রহস্য। কিন্তু তার আগে কত জন প্রতারিত হয়েছেন, সে খবর এখনও মেলেনি।

টুঙ্গিদিঘিতে ওই এটিএমটি একটি বেসরকারি সংস্থার। অন্য সব এটিএম বন্ধ থাকলেও এই এটিএমটি খোলা ছিল। স্থানীয় এক বাসিন্দা ওই এটিএম টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। তিনি জানান, টাকা বেরোনোর শব্দও তিনি শুনেছেন। মোবাইলে মেসেজও পান। সন্দেহ কাটাতে ওই এটিএমে ব্যালেন্স চেক করে দেখেন টাকা তোলা হয়েছে। তা হলে টাকা গেল কোথায়?

এরপরেই তাঁর চোখ যায়, মেশিনের যে অংশ দিয়ে টাকা বের হয় সেখানে একটা কভার আকারের বাক্স রয়েছে। সেই কভার হাত দেওয়ার পরে খুলে যায়। আর সেই কভারে আটকে রয়েছে টাকা।

ওই যুবক জানালেন, কভার এমন ভাবে আটকানো ছিল যে, বাইরে থেকে বোঝার কোনও উপায় নেই। তিনি গোটা বিষয়টি পুলিশকে জানান। করণদিঘি থানার পুলিশ জানিয়েছে, এটা আর এক অভিনব ফাঁদ পেতেছে কোনও প্রতারণা চক্র।

টুঙ্গিদিঘি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক নীলকমল কুণ্ডু বলেন, ‘‘অনেকে ভাবতেন মেশিনে কোনও ত্রুটিতে টাকা খুইয়েছেন। কিন্তু ব্যাঙ্ক স্বাভাবিক ভাবেই তা মানতে চাইত না। এত দিনে বোঝা গেল রহস্য।’’

করণদিঘি থানার আইসি পরিমল সাহা জানিয়েছেন, এটিএম সংস্থাকে খবর দেওয়া হয়েছে। এটিএমটি একটি বেসরকারি বিমা সংস্থার। আপাতত তদন্তের স্বার্থে এটিএম বুথ বন্ধ রাখা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমার জানিয়েছেন, তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রাহকদের সচেতন করতে এই ঘটনাটি সম্পর্কে সচেতন করতে তথ্যচিত্র আকারে তুলে ধরা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন