খাওয়াতে হল শেষে গাড়িতে

শিশুর মা হলদিবাড়ির স্কুল শিক্ষিকা তানিয়া মজুমদার বিলক্ষণ বুঝেছিলেন, তাঁর ছোট্ট মেয়ের খিদে পেয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শে আপাতত শুধু মায়ের দুধই খায় সে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৪
Share:

হলদিবাড়ি থেকে জলপাইগুড়ির ডিবিসি রোডের শপিং মলে এসেছিলেন এক দম্পতি। সঙ্গে ছিল তাঁদের কোলের শিশুও। অনেকক্ষণ ধরে কেঁদে ভাসাচ্ছিল সেই খুদে। মুখের সামনে ঝুনঝুনি বাজানো হলেও থামেনি কান্না। জলের বোতল মুখের সামনে ধরিয়ে, মোবাইলে কার্টুন চালিয়েও কান্না থামানো যাচ্ছিল না কান্না।

Advertisement

শিশুর মা হলদিবাড়ির স্কুল শিক্ষিকা তানিয়া মজুমদার বিলক্ষণ বুঝেছিলেন, তাঁর ছোট্ট মেয়ের খিদে পেয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শে আপাতত শুধু মায়ের দুধই খায় সে। কিন্তু ভিড়ে ঠাসা মলের মধ্যে কোথায় মেয়েকে স্তন্যপান করাবেন তা বুঝেই উঠতে পারছিলেন না তিনি।

তাঁর কথায়, ‘‘অসহায় বোধ করেছিলাম সেদিন। পোশাকের দোকান থেকে বের হয়ে পাশের রেস্তরাঁয় যাই। সেখানেও আড়াল নেই। এ দিকে খিদেয় মেয়ে কাহিল। শেষ পর্যন্ত একটা কোণার টেবিলে গিয়ে খাওয়াতে বাধ্য হই। মলে কত কী ব্যবস্থা থাকে শিশুদের জন্য এ দিকটা ভাবা দরকার।’’

Advertisement

প্রায় একই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন জলপাইগুড়ির এক চিকিৎসক দম্পতি। শপিং মলের তিনতলা থেকে বাজারের ট্রলি ছেড়ে নামতে বাধ্য হয়েছিলেন। গত সপ্তাহের ঘটনা। ওই দম্পতি সারা মাসের বাজার করছিলেন কদমতলার একটি মলে। সেখানেই তাঁদের মাস খানেকের পুত্র সন্তান কাঁদতে শুরু করে। মলে ছেলেকে স্তন্যপান করানোর কোনও জায়গা না পেয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে হয় তাঁদের। রাস্তার পাশে দাঁড়ানো নিজেদের গাড়িতে পৌঁছে তবেই ছেলেকে খাওয়াতে পারেন তিনি।

চিকিৎসক মায়ের কথায়, ‘‘আমাদের না হয় গাড়ি রয়েছে। যাদের নেই তাঁরা কী করবেন। দুধের শিশুকে খালি পেটে রাখা যায়? এটুকু তো মল কর্তৃপক্ষের দেখা উচিত।’’

জলপাইগুড়ি শহরের ডিবিসি রোড এবং কদমতলায় তিনটে মল রয়েছে। তার কোনওটিতেই এমন ঘর নেই যেখানে মায়েরা শিশুদের স্তন্যপান করাতে পারেন। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘অনেক সময় ছোট শিশুদের কাপড় বদলাতে হয়। সেটার জন্যও একটা ছোট ঘর অন্তত রাখা উচিত।’’ কদমতলার একটি মলের তরফে সুমন দত্ত বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে মলের আরও সম্প্রসারণ হবে। তখন অবশ্যই এর বন্দোবস্ত করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন