অনাস্থা এনে গদি বাঁচাল বিরোধী জোট

বিরোধীদের দল ভাঙিয়ে অনাস্থা এনে প়ঞ্চায়েত দখল রুখতে চাঁচলের খরবা গ্রাম প়ঞ্চায়েতে সেই অনাস্থাকেই হাতিয়ার করেছিল সিপিএম ও কংগ্রেস জোট। তৃণমূলকে আটকাতে তাদের ওই কৌশল সফলও হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাঁচল শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৬ ০১:৪০
Share:

বিরোধীদের দল ভাঙিয়ে অনাস্থা এনে প়ঞ্চায়েত দখল রুখতে চাঁচলের খরবা গ্রাম প়ঞ্চায়েতে সেই অনাস্থাকেই হাতিয়ার করেছিল সিপিএম ও কংগ্রেস জোট। তৃণমূলকে আটকাতে তাদের ওই কৌশল সফলও হল।

Advertisement

সিপিএমের প্রধানের বিরুদ্ধে দলীয় সদস্যদের পাশাপাশি বিরোধী কংগ্রেসের ৯ সদস্য জোট বেঁধে অনাস্থা পেশ করেছিলেন। জোটের আনা এই অনাস্থার পর বুধবার তলবি সভা ডাকা হয়েছিল মালদহের । কিন্তু সিপিএম ও কংগ্রেসের কোনও সদস্য হাজির না হওয়ায় প্রধান পদে থেকে গেলেন সিপিএমের জাহানারা বিবি। আগামী এক বছর আর কোনও অনাস্থা পেশ করা যাবে না।

চাঁচল-১ ব্লকের বিডিও সুব্রত কুমার বর্মন বলেন, ‘‘এ দিন সদস্যরা হাজির না হওয়ায় ভোটাভুটি হয়নি। ফলে স্বপদেই রয়ে গেলেন প্রধান। যদি ভোটাভুটিতে প্রধান পাল্টে যেত তবে আড়াই বছরের মধ্যে আর অনাস্থা আনা যেত না। এ দিন যেহেতু ভোটাভুটির প্রশ্ন ওঠেনি, তাই এক বছরের মধ্যে অনাস্থা আনা যাবে না।’’

Advertisement

প্রশাসনসূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯ আসনের খরবা গ্রাম পঞ্চায়েতে শাসকদলের কোনও সদস্য ছিল না। কিন্তু সম্প্রতি সিপিএম ও কংগ্রেস সদস্যদের প্রলোভনের পাশাপাশি মিথ্যে মামলার ভয় দেখিয়ে তৃণমূল তাদের দলে টানার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। এই পরিস্থিতি এড়াতে ক্ষমতাসীন সিপিএম বোর্ড ও বিরোধী কংগ্রেসের সদস্যরা বিডিওর কাছে জোট বেঁধে আগেভাগেই প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ করেছিলেন। এ দিন ছিল অনাস্থার তলবি সভা। নিয়মানুযায়ী, অনাস্থা পেশ হলে তলবি সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা যে তাঁর দিকে রয়েছেন সেই আস্থা প্রমাণ করতে হয়। কিন্তু এ দিনের সভায় কোনও সদস্যই হাজির হননি।

এ ক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য যেহেতু প্রধানের পক্ষে, তাই তলবি সভায় আস্থা প্রমাণ করাটাও নিশ্চিত ছিল। কিন্তু তারপরেও কেন জোটের সদস্যরা তলবি সভায় গরহাজির থাকলেন সেই প্রশ্ন উঠছে।

বিরোধী আসনেও তৃণমূলের থাকা আটকাতে এই কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে। চাঁচল ১ এর ব্লক কংগ্রেস সভাপতি ইন্দ্র নারায়ণ মজুমদার বলেন,‘‘ প্রধানের পক্ষে ভোট দিলে বিরোধী দলনেতার পদের দাবিদার হতে পারত না কংগ্রেস। তাই যাইনি। সিপিএমের ঘর ভাঙিয়ে চার সদস্যকে দলে টেনেছে তৃণমূল। ফলে তারাই বিরোধী দলনেতার পদের দাবিদার হতেন!’’ আর সিপিএমের চাঁচল লোকাল কমিটির সম্পাদক অমল মণ্ডলের যুক্তি, ‘‘ভোটাভুটি না হলেও প্রধান তাঁর পদে থেকে যাচ্ছেন। তাই সভায় গরহাজির ছিলেন সদস্যরা।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, তৃণমূল অনৈতিকভাবে মোটা টাকা ও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে অন্যদের ঘর ভাঙছিল বলেই এই কৌশল নিতে হয়েছিল। জেলা তৃণমূল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন অবশ্য বলেছেন, ‘‘অনৈতিকভাবে আমরা কারও ঘর ভাঙতে যাইনি। বরং ওরাই নোংরা খেলা শুরু করেছে।’’

এই গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেস বিরোধী পক্ষ হলেও গত বিধানসভা নির্বাচনে জোট হওয়ার পর থেকে সিপিএম ও কংগ্রেস সদস্যরা কার্যত জোট বেঁধে পঞ্চায়েত চালাচ্ছেন বলেই জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন