সুনসান মন্দির

নোট বিপর্যয়ে প্রণামী বাক্সেও বাড়ছে সঙ্কট

নোট বিপর্যয়ের জের এ বার মন্দিরগুলিতেও। প্রণামী বাক্সে অর্থ সঙ্কট। গত চার দিনে সেই সঙ্কট বেড়েছে। আর পাঁচটা দিনের মতো পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে শিলিগুড়ির বিভিন্ন মন্দিরগুলিতে। অথচ ভক্ত, উৎসাহী আসছেন নামমাত্র।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ০২:২৫
Share:

নোট বিপর্যয়ের জের এ বার মন্দিরগুলিতেও। প্রণামী বাক্সে অর্থ সঙ্কট। গত চার দিনে সেই সঙ্কট বেড়েছে।

Advertisement

আর পাঁচটা দিনের মতো পুজোর আয়োজন করা হচ্ছে শিলিগুড়ির বিভিন্ন মন্দিরগুলিতে। অথচ ভক্ত, উৎসাহী আসছেন নামমাত্র। শিলিগুড়ির মায়ের ইচ্ছে কালীবাড়ি, আনন্দময়ী কালীবাড়ি, মহাবীরস্থান হনুমানমন্দির, বিধানরোড়ের মা ভবানীর মন্দিরের প্রণামীবাক্সে অর্থের টান সচরাচর পড়ে না। ভক্তেরা প্রণামী জোগান অকাতরে। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে সেই জোগানেও ভাটা পড়েছে। প্রণামী বাক্সে অর্থ সঙ্কট নিয়ে চিন্তায় মন্দিরগুলির কর্তৃপক্ষ।

শক্তিগড় এলাকার গৌড়ীয় মঠের স্বামীজিও জানান, তাঁদের মন্দিরেও প্রণামী দান কমেছে। কর্তৃপক্ষ সূত্রেই জানা গিয়েছে, শনিবার এবং মঙ্গলবার কালীমন্দির, হনুমানজির মন্দিরে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়। অথচ যে মন্দিরে দু’হাজার ভক্ত সামিল হন, শনিবার সেখানে মেরেকেটে দু’শো জন এসেছেন। অন্য সময় প্রণামী বাক্সে একশো, পঞ্চাশ, দশ, বিশ টাকা সামর্থ্য মতো দান করেন উৎসাহীরা। প্রণামীবাক্স ভরে ওঠে। গত কয়েক দিনে পরিস্থিতি বদলেছে। মন্দিরগুলির কর্তৃপক্ষের মতে পাঁচশো এক হাজার টাকা নোট অচল ঘোষণার পর অনেকের হাতে অন্য নোটের টাকা বিশেষ নেই। যেটুকু রয়েছে নিজেদের বাজার হাট করতেই খরচ হচ্ছে। এটিএম বন্ধ থাকছে। খুললেও লম্বা লাইন। ব্যাঙ্কগুলিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা মিলছে না। মন্দিরে আসবেন কখন! হাতে বাড়তি টাকা না থাকলে প্রণামীই বা দেবেন বা কী?

Advertisement

মায়ের ইচ্ছে কালীবাড়ির পুরোহিত রতন তপস্বী বলেন, ‘‘শনিবার এই মন্দিরে ভিড় উপচে পড়ে। অথচ গত শনিবার সব মিলে দুই, আড়াইশো জন এসেছিলেন। প্রণামীও তেমন জমা পড়েনি।’’ ওই প্রণামী থেকেই পুজোর আয়োজন হয়। বেশি দিন এই পরিস্থিতি চললে সমস্যা হবে বলে তিনি জানান। শহরে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আনন্দময়ী কালী বাড়ি যান বাসিন্দারা। সেখানেও গত কয়েক দিন ভক্তদের যাতায়াত, প্রণামী দান উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। মন্দির কমিটির সহ-সম্পাদক আশিস চৌধুরী জানান, শনিবার সাধারণত হাজার তিনেক লোক হয়। ভাল প্রণামী ওঠে। এ বার পাঁচশোর বেশি জনসমাগম হয়নি।

এলাকার ব্যবসায়ীরা সকালে দোকান খোলার সময় মহাবীরস্থানে হনুমানজির মন্দিরে এসে প্রণাম করেন। পুজারী টিপ পড়িয়ে দিলে কেউ দশ, বিশ, পঞ্চাশ, একশো টাকা দক্ষিণা দেন। গত কয়েক দিন খাঁখাঁ পরিস্থিতি। তা দেখে চিন্তায় পুরোহিত জিতেন্দ্র মিত্ররাও।

মন্দির লাগোয়া ফুটপাথে পুজো দিতে আসা ভক্তদের জন্য ধূপকাঠি, আলতা সিঁদুর, সন্দেশের দোকান রয়েছে। তাঁদেরও কারবারে ভাটা পড়েছে বলে জানান অমিত মোহান্ত, রঞ্জন সাহাদের মতো ব্যবসায়ীরা।

পাঁচিল ভাঙার অভিযোগ। জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলাকালীন সীমানা পাঁচিল ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রধাননগরে। শনিবার সকালে ওই জমিতে পে লোডার নিয়ে এসে একদল দুষ্কৃতী পাঁচিল ভাঙে ও এক ব্যক্তিকে মারধরও করে বলে অভিযোগ। ওই দিনই প্রধাননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। জমিটিতে আদালতের নির্দেশে ‘ইনজাংশন’ রয়েছে। সীমানা পাঁচিলও তৈরি হয়েছে আদালতের নির্দেশে। পুলিশকে এর আগে জানানো হলেও, কোনও পদক্ষেপ হয়নি বলে অভিযোগ। শিলিগুড়ি পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, শনিবারে ওই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্তও শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন