হেলমেট নেই, নিয়ম ভাঙাই রীতি কালিয়াচকে

মোটরবাইকের পিছনের সিটে মেয়ে ও স্ত্রী। সামনে বছর তিনেকের ছেলেকে বসিয়ে নিয়ে দ্রুতগতিতে চলে গেলেন চল্লিশোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। আরও দ্রুত গতিতে তাঁকে পেরিয়ে গেলেন এক যুবক। তাঁর পিছনে বসে তিন তরুণী। দু’টি বাইকের কারও মাথায় ছিল না কোনও হেলমেট।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:২০
Share:

মোটরবাইকের পিছনের সিটে মেয়ে ও স্ত্রী। সামনে বছর তিনেকের ছেলেকে বসিয়ে নিয়ে দ্রুতগতিতে চলে গেলেন চল্লিশোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। আরও দ্রুত গতিতে তাঁকে পেরিয়ে গেলেন এক যুবক। তাঁর পিছনে বসে তিন তরুণী। দু’টি বাইকের কারও মাথায় ছিল না কোনও হেলমেট। চোখের সামনে এমন দৃশ্যে দেখেও চুপ করে রইলেন ট্রাফিক পুলিশ।

Advertisement

এমন নিয়ম ভাঙাই এখন রেওয়াজ হয়ে উঠেছে মালদহের কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগরে। ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ এর কড়াকড়ি এখন অতীত। পাম্পেও এখন হেলমেট ছাড়াই মিলছে পেট্রোল। অথচ কয়েক মাস আগেই সারা রাজ্যের মতো মালদহ জেলাতেও ব্যাপক হইচই শুরু হয়েছিল হেলমেট নিয়ে। ডিএসপি পদমর্যদার অফিসারেরা নিজেরাই রাস্তায় নেমে ধরপাকড় শুরু করেছিলেন। শহরের সঙ্গে সঙ্গে গ্রামগঞ্জেও নিয়ম করে চলছিল ধরপাকড়। হেলমেট ছাড়া পাম্পগুলিতে পেট্রোল দেওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। পাম্পগুলিতে ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ লেখা বোর্ডও ঝোলানো হয়েছিল।

সেই বোর্ড ঝুলছে এখনও। কিন্তু সেই নিয়ম রয়ে গিয়েছে বোর্ডেই। জেলায় ইংরেজবাজার, পুরাতন মালদহ-সহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষই হেলমেট পরে বাইক চালাচ্ছেন বলে দাবি পুলিশের। তবে ব্যতিক্রম যেন কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগর। এই দুই থানা এলাকায় নিয়ম ভাঙাটাই রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কালিয়াচকের চৌরঙ্গি মোড়, সুজাপুর, জালালপুর, মোজমপুর, নওদা যদুপুর, ১৬ মাইল এবং বৈষ্ণবনগরের ১৮ মাইল, পিটিএস মোড়, বৈষ্ণবনগর প্রভুতি এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকলেই দেখা যাবে খালি মাথায় তিনজন বা চারজন যাত্রী নিয়ে ছুটছে একটি মোটরবাইক। যার ফলে প্রায়ই পথ দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটছে। পাম্প মালিকদের একাংশ দুষেছেন পুলিশ-প্রশাসনকে। তাঁদের অভিযোগ, আগে পুলিশি কড়াকড়ির জন্য তাঁরা হেলমেট ছাড়া পেট্রোল দিতে আপত্তি করতেন। কিন্তু এখন তা না থাকায় তাঁরা হুমকির ভয়েই পেট্রোল দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এক পাম্প মালিকের কথায়, ‘‘এমনিতেই কালিয়াচক এলাকায় দুষ্কৃতীদের দাপাদাপিতে আমরা আতঙ্কে থাকি। তাই কোন ভরসায় পেট্রোল দিতে অস্বীকার করব? সকলেরই প্রাণের ভয় আছে।’’ তাঁদের দাবি, নিয়মিত ধরপাকড়ের সঙ্গে সচেতনতাও বাড়ানো প্রয়োজন। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘প্রয়োজনে অভিযান আরও বাড়ানো হবে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন