ঝড়ের পরেও মেলেনি ত্রাণ

রবিবার বিকেলে ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে সব। তার এক দিন পরেও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানিকচক ও কালিয়াচক ২ ব্লকের কোনও এলাকায় ত্রাণ না পৌঁছানোয় ক্ষোভ বাড়ছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির। ত্রিপল না থাকায় দু’টি ব্লকের কয়েকশো পরিবার রবিবার খোলা আকাশের নীচে রাত কাটান।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

মালদহ শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৭ ০২:৩৩
Share:

ঝড়ে ভেঙে পড়েছে গাছ। নিজস্ব চিত্র

রবিবার বিকেলে ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে সব। তার এক দিন পরেও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানিকচক ও কালিয়াচক ২ ব্লকের কোনও এলাকায় ত্রাণ না পৌঁছানোয় ক্ষোভ বাড়ছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির। ত্রিপল না থাকায় দু’টি ব্লকের কয়েকশো পরিবার রবিবার খোলা আকাশের নীচে রাত কাটান। সবচেয়ে করুণ অবস্থা মানিকচক ব্লকে গঙ্গাবক্ষে থাকা নারায়ণপুর চরের প্রায় দু’শো পরিবারের। এখানকার প্রায় সমস্ত বাড়িই ভেঙে পড়েছে ঝড়ে। খাবারের সম্বলটুকুও নষ্ট হয়েছে। এ দিন দুপুর পর্যন্ত ত্রাণ না মেলায় অনেক পরিবারেই উনুনে আঁচ পরেনি।

Advertisement

এ দিকে রবিবার ঝড়ের সময় কালিয়াচক ২ ব্লকের পঞ্চানন্দপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সুলতানটোলা গ্রামে বাজে আহত ১৩ বছরের প্রসেনজিত মণ্ডলের মৃত্যু হয়েছে বাঙিটোলা হাসপাতালে। এই ঘটনায় জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল দুই।

রবিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ কালবৈশাখীর ঝড় আছড়ে পড়ে গঙ্গা তীরবর্তী মানিকচক ব্লকে। ঝড়ে মানিকচক, ধরমপুর ও গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের একাংশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। অসংখ্য কাঁচা বাড়ির চাল উড়ে যায়। ভেঙে পড়ে বহু বাড়ি। উপড়ে পড়ে প্রচুর গাছ ও একাধিক বিদ্যুতের খুঁটি। ঝড়-বৃষ্টির সময় গোপালপুরের আমিরণ বিবি বাজ পড়ে মারা যান। ঝড়ের তাণ্ডব চলে সংলগ্ন কালিয়াচক ২ ব্লকের বাঙিটোলা ও পঞ্চানন্দপুর ১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। সেখানেও প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

Advertisement

নারায়ণপুর চরের ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা ললিত চৌধুরী, রামচন্দ্র চৌধুরী, সীতারাম চৌধুরীরা বলেন, ‘‘ঝড়ে এখানকার প্রায় সমস্ত ঘরবাড়ির চাল উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে। ঘরে কোনও ত্রিপল না থাকায় খোলা আকাশের নীচেই পরিবার নিয়ে রাত কাটাতে হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনের তরফে কেউই খোঁজ নিতে আসেনি।’’ একই অবস্থা ধরমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সওদাগরটোলা গ্রামের। দিলীপ মণ্ডল, শ্যামল মণ্ডলরা বলেন, ‘‘ঘরের টিনের চাল ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে অনেকটা দূরে ফেলেছে। রাতে মাথা গোঁজার কোনও ঠাঁইই ছিল না। ফলে খোলা আকাশের নীচেই রাত কেটেছে।’’

মালদহ জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘বিডিওদের দ্রুত ত্রাণ পৌঁছনোর জন্য বলা হয়েছে।’’ মানিকচকের বিডিও উৎপল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ দিন বেলা ১০টার পর ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। পরে ত্রাণও পাঠানো হয়েছে।’’ কালিয়াচক ২ ব্লকের বিডিও অরিজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ দিন সকাল থেকেই কয়েকটি দল ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে। সেই ভিত্তিতে ত্রাণ বিলি করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন