মাদার টেরিজার ছবিতে চলছে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন। শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক ।
এলইডি স্ক্রিনে সরাসরি মাদারের সন্তায়নের মুহূর্ত ভেসে উঠল পাহাড়ে। সমতলের চার্চে জড়ো হয়ে সকাল থেকে চলল প্রার্থনা। মাদারের ‘অলৌকিক’ ক্ষমতায় যিনি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন, সেই মনিকা বেসরাও যোগ দিলেন প্রার্থনা সভায়। রবিবারের সকাল থেকে দিনভর উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় চলল মাদার-উৎসব।
রবিবার বিকেলে দুই সংগঠনের আয়োজনে রায়গঞ্জ সুপার মার্কেটে প্রার্থনা সভার আয়োজন হয়েছিল। সেখানে এসেছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরের নাকোড় গ্রামের বাসিন্দা মনিকা বেসরা। প্রার্থনাসভার পরে স্বাস্থ্যপরীক্ষা শিবির, বসে আঁকো ও রচনা লেখা প্রতিযোগিতাও হয়েছে। মাদারের ছবির সামনে মনিকাদেবী মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনা শুরু করেন। মাদার টেরিজার ‘অলৌকিক’ শক্তিতেই তাঁর পেটের টিউমার সেরে যায় বলে এ দিন ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় জানান মনিকাদেবী।
প্রার্থনাসভা ও অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ক্যারিটাসের ডিরেক্টর হেরমান কিন্ডো, ফোরামের জেলা সম্পাদক সুব্রত সরকার, রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত সহ বিশিষ্ট জনেরা। শিলিগুড়ির প্রধাননগরের চার্চে দুপুর বারোটা থেকে যখন প্রার্থনা শুরু হয়েছে, ভ্যাটিকান সিটিতে সেই সময়েই পোপ মাদারকে সন্ত ঘোষণা করছেন।
প্রধাননগরের চার্চের চারপাশ সেজে ওঠে মাদারের ছবি দিয়ে। ফ্লেক্সে লেখা হয়েছে মাদারের বাণী। মাদার বলেছিলেন, মানুষকে বিচার করতে শুরু করলে, তাতেই সময় চলে যায়। ভালবাসার সময় কম পড়ে। এমনই নানা বাণী দিয়ে সাজানো হয়েছিল চার্চ।
অনুষ্ঠান শুরু হয় প্রার্থনা দিয়ে, তার পরে ভজন, বাইবেল পাঠ, মাদারের নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা হয়। উদ্যোক্তাদের অন্যতম সুব্রত সাহা বলেন, ‘‘মানুষকে ভালবাসাই ছিল মাদারের মূল বক্তব্য। এই কাজে তিনি কোনও ধর্ম, ভেদাভেদ বিচার করেননি। আমরা আজকে সেই বার্তাই দিয়েছি সকলকে।’’
সন্ত ঘোষণার মুহূর্ত সরাসরি সম্প্রচার হয়েছে দার্জিলিঙের চৌরাস্তায়। এলইডি স্ক্রিনে দেখানো হয়েছে সেই মুহূর্ত। দার্জিলিঙের চার্চের একটি বাগান মাদারের নামে উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে এ দিন। হবে গ্রন্থাগারও। গোর্খা রঙ্গ মঞ্চে একটি প্রার্থনাও হয়েছে এ দিন।
রবিবার এমনিতেই সাপ্তাহিক প্রার্থনা ছিল চার্চে। এ দিন মাদারের ছবিতে খাদা দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় দার্জিলিঙে। প্রার্থনা হয়েছে জলপাইগুড়ির বিভিন্ন চার্চেও। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর শিলিগুড়িতে ফের প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এ ভাবেই মোমবাতি-ফুল-খাদার শ্রদ্ধার্ঘ্যে ভ্যাটিক্যানের ঘোষণার মুহূর্তকে স্মরণীয় হয়ে রইল উত্তরে।