মুখোমুখি: সাবেক ছিটে বাসিন্দাদের সঙ্গে মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
সাবেক ছিটমহলে রাস্তার কাজ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় পরিদর্শনে গেলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। শনিবার পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে তিনি দিনহাটার সাবেক ছিটমহল করলা ও বাত্রীগছে যান। সেখানে আগে থেকেই শাসক দলের স্থানীয় নেতা ও কর্মীরা জমায়েত ছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় বাসিন্দারা মন্ত্রীকে অভিযোগ করার মতো সুযোগই পাননি। এ ছাড়া পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে মন্ত্রী শুধু এলাকা ঘুরলেন কেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বিজেপির দাবি, গুণগত মান পরীক্ষা বা প্রকল্প অনুযায়ী মাপ কোনওটি এ দিন হয়নি। মশালডাঙা ও পোয়াতুরকুঠির মতো ছিটমহলে যেখানে অভিযোগ বেশি সেখানে মন্ত্রী গেলেন না কেন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
মন্ত্রী অবশ্য বলেন, “কোথাও দুর্নীতি হচ্ছে না। কী কাজ হচ্ছে তা চোখেই দেখা যাচ্ছে। বাসিন্দাদেরও কোনও অভিযোগ নেই। বিজেপি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে উন্নয়নের কাজ স্তব্ধ করার জন্য এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে।” তিনি জানান, সাবেক ছিটমহলের রাস্তার কাজ পাকুড়ের কালো পাথর দিয়ে হচ্ছে। সাধারণত গ্রামাঞ্চলে ওই পাথরের কাজ হয় না। তিনি বলেন, “পুজোর মধ্যে ১৮টি সাবেক ছিটমহলে রাস্তার কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।”
বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে পাল্টা বলেন, “সাবেক ছিটমহলের কাজের সঙ্গে অন্য কোনও কাজের তুলনা হয় না। কেন্দ্রীয় সরকার ওই কাজের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ হয়েছে সেই মানের কাজ হচ্ছে না। কাজের মান পরীক্ষা করলেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।” বিজেপির কটাক্ষ, অভিযোগ উঠলে প্রশাসনের অফিসারদের তদন্ত করার কথা। কিন্তু, তার আগেই ‘ভাল কাজ হচ্ছে’ বলে খোদ মন্ত্রী সার্টিফিকেট দেওয়াটা কতটা যুক্তিযুক্ত তা জনতাই বিচার করবে।
সাবেক ছিটে উন্নয়নের কাজের জন্য ইতিমধ্যে কয়েকশো কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি সাবেক ছিটমহলে ৫০ কোটি টাকার কাজ চলছে। বাকি ছিটমলেও রাস্তার কাজ শুরু হবে। সেই কাজে ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করে জেলাশাসককে স্মারকলিপি দেয় বিজেপি। তা নিয়ে সাতদিনের মধ্যে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আদালতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দেয় তারা। উপরন্তু, ছিটমহলের বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, তাঁরা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ছিটমহলের বিপুল টাকার কাজের সুযোগে ঠিকাদার-ইঞ্জিনিয়র-নেতাদের কেউ রাতারাতি ফুলেফেঁপে উঠছেন কি না তা নিয়ে তদন্তের লিখিত আর্জি জানানো হবে। এর পরেই মন্ত্রী নিজে যান।