অফলাইনে ভর্তি, ক্ষোভ

কলেজ কর্তৃপক্ষ অনলাইনের ভর্তিতেও দুর্নীতি করছেন বলে দাবি করে ক্ষোভে ফেটে পড়েন পড়ুয়ারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০১৭ ০৭:৩০
Share:

আন্দোলন: মালদহ কলেজে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনে কলেজের ভর্তি সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়কের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন দিলীপ দেবনাথ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ঘরেই ভর্তি দিলীপবাবুকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন একদল ছাত্র-ছাত্রী। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের নির্দেশিকাকে অমান্য করে অফলাইনের মাধ্যমে ভর্তি নেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন দিলীপবাবু। এমনকী, নিয়ম বহির্ভূত ভাবে শিক্ষা বিজ্ঞান বিভাগেও দুই পড়ুয়াকে ভর্তি করার অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এ দিন দুপুর থেকে তাঁর পদত্যাগের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ক্ষণ ধরে চলে ঘেরাও অবস্থান। কলেজে বিক্ষোভের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে ফের শাসক দলের ছাত্র সংগঠনেরও। যদিও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরাই আন্দোলন করেছেন বলে দাবি করেছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতাদের। পরে দিলীপবাবু জানান, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের দাবি মেনেই আমি পদ থেকে ইস্তফা দিলাম।’’

এরই মধ্যে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার ঘেরাও আন্দোলন চলছে। গত, মঙ্গলবারই একদল ছাত্র-ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে একাধিক পোস্টার ঝুলিয়েছে। এর মধ্যে এ দিন এ বার মালদহ কলেজে ঘটল ছাত্র বিক্ষোভ। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, জুন মাসে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তবে এখনও বেশ কিছু বিষয়ে আসন শূন্যপদ রয়েছে। অভিযোগ, কলেজের ভর্তি সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক দিলীপ দেবনাথ গত ২ নভেম্বর শূন্যপদ থাকা আসনগুলিতে ভর্তি নেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। তবে সেই বিজ্ঞপ্তি অনলাইনে না করে অফ লাইনে করা হয়। এই নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছিল। তাঁদের অভিযোগ, ভর্তি প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতি রয়েছে। কলেজের শিক্ষা বিজ্ঞান বিভাগে দুই ছাত্র-ছাত্রীর মেধা তালিকায় নাম পরে থাকা সত্ত্বেও তাঁদের ভর্তি নেওয়া হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ অনলাইনের ভর্তিতেও দুর্নীতি করছেন বলে দাবি করে ক্ষোভে ফেটে পড়েন পড়ুয়ারা।

Advertisement

এ দিন দুপুরেই ভর্তি সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়কের বিরুদ্ধে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রভাস চৌধুরীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন একদল ছাত্র-ছাত্রী। তারপরই দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয় দিলীপবাবুর পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ। প্রথমে তাঁর বিভাগের সামনে চলে ঘেরাও। নিজের বিভাগ থেকে অধ্যক্ষের ঘরে আসেন দিলীপবাবু। সেখানে তাঁকে ঘেরাও করে পদত্যাগ করার দাবি তোলেন ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা। এমনকী, প্রথমদিকে দিলীপবাবুকে শৌচাগারে যেতেও বাধা দেওয়া হয়। ছাত্র-ছাত্রীরা বলেন, ভর্তি প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে রাজ্য সরকার অনলাইন পদ্বতি চালু করেছে। তারপরেও কিছু আধিকারিক ভর্তিতে অনিয়ম করছেন। কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ঘোষ বলেন, “অতীতে ভর্তি সংক্রান্ত কমিটিতে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে জিএসকে রাখা হলেও এ বারে তা হয়নি। তাতে আমরা কোনও ক্ষোভ প্রকাশ করিনি। তারপরেও ভর্তিতে অনিয়ম হওয়ায় পড়ুয়ারা নিজেরাই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন।” এখানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কোনও ভূমিকা নেই বলে দাবি করেন তিনি। দিলীপবাবু বলেন, “স্বচ্ছ ভাবেই ভর্তি প্রক্রিয়া হয়েছে। তবে ভুলবশত বিজ্ঞপ্তি অফলাইনে দেওয়া হয়েছিল। পরে তা খুলে দেওয়া হয়।” ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রভাসবাবু বলেন, “পড়ুয়াদের দাবি তদন্ত করে দেখা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন