প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মাদারিহাটে মৃত্যু হল এক মহিলার। রবিবার রাতে বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ওই মহিলার মৃত্যু হয়। জহরা বিবি (৫০) নামে ওই মহিলাকে প্রথমে মাদারিহাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে ডেঙ্গির চিকিৎসার সুযোগ না থাকায় তাকে বীরপাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।
মাদারিহাট সহ আশপাশের চা বাগানগুলিতে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ায় চিন্তায় স্বাস্থ্য বিভাগ। মাদারিহাটের ভারপ্রাপ্ত ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সফিউল আলম মল্লিক জানান, “জহরা বিবি প্রথমে মাদারিহাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ডেঙ্গি পরীক্ষার সুবিধা না থাকায় তাঁকে বীরপাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। প্রতিদিন মাদারিহাট ও আশপাশের চা বাগান থেকে বহু রোগী ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসছে। মাদারিহাটে ডেঙ্গি চিকিৎসার সুযোগ না থাকায় তাঁদের আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। ”
ভাইরাল জ্বরের সঙ্গে ডেঙ্গিও থাবা বসানোয় আতঙ্কে ভুগছেন মালদহবাসী। শহরে দেখা দিচ্ছে ডেঙ্গির প্রকোপও। সে জন্য পুর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে। পুরসভার ভুমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও।
অভিযোগ, গত বছরেও শহরে ব্যাপক হারে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। তারপরেও কোনও শিক্ষা নেয়নি পুরসভা। পুরসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি বলেন, “নিয়মিত আবর্জনা সাফাই করা হয় না। মশা মারার কীটনাশকও স্প্রে করা হয় না।’’ তবে অভিযোগ মানতে চাননি ইংরেজবাজার পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভার চেয়ারম্যান নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, “ডেঙ্গি নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে বাড়ি বাড়ি লিফলেট বিলি করা চলছে। এ ছাড়া আমরা নিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার করার চেষ্টা করছি। প্রয়োজনে আরও পদক্ষেপ করা হবে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর জেলাতে এক হাজারেরও বেশি মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ইংরেজবাজার শহরেই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল শতাধিক। পুরসভার ২৯টি ওয়ার্ডেই ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। এ বারও ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। ইতিমধ্যে জেলাতে ১৮০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে শহরেই আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১৫ জন। এছাড়া ভাইরাল জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যাও প্রতিদিনই বাড়ছে।
মেডিক্যালে প্রতিদিন বহির্বিভাগে জ্বর নিয়ে চিকিৎসার জন্য আসছেন গড়ে ২০০ থেকে ২৫০ জন। পুরুষ এবং মহিলা বিভাগে ভর্তি রয়েছেন প্রায় দেড় শতাধিক। শয্যা না পেয়ে মেঝেতে কিংবা হাসপাতালের বারান্দায় রোগীদের রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে। শহরবাসীর অভিযোগ, শহরের বিভিন্ন স্থানে নোংরা, আবর্জনার স্তুপ জমে রয়েছে। তাই দিনের বেলাতেও মশার উপদ্রবে নাজেহাল হতে হচ্ছে। অথচ ব্লিচিং কিংবা মশা মারার স্প্রে করতে উদ্যোগী হচ্ছে না পুরসভা।