প্রতীকী ছবি।
বিধায়ক-সাংসদ থেকে শুরু করে সরকারি আমলা, সকলকেই বাগানে যেতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। এ বার ত্রি-স্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকেও বাগান শ্রমিকদের ঘরে ঘরে পৌঁছতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ির গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ, সব স্তরের সদস্য ও আধিকারিকদের চা বাগান এবং তার সঙ্গে আদিবাসী মহল্লায় যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নতুন বছরে জেলা পরিষদকে চা বাগানে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে।
গত পঞ্চায়েত ভোটের ফল অনুযায়ী জেলার চা বলয়ে বিশেষ করে আদিবাসী সমাজে বিজেপির প্রভাব বাড়ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আলিপুরদুয়ার জেলার চা বলয়ে জেলা পরিষদের একটি আসনে বিজেপি জয় পাওয়ায় শাসকদলের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তারপর থেকেই জেলা প্রশাসনকে নিয়মিত বাগানে পাঠাচ্ছে রাজ্য। তৃণমূলের জেলা সভাপতি ও এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীও জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সদস্যদের চা বাগানে যেতে হবে বলে জানিয়েছেন। বিরোধীদের দাবি, এই বছরেই লোকসভা ভোট। সে কথা মাথায় রেখেই তৃণমূলের এই সিদ্ধান্ত।
জেলার সব চা বাগানের প্রতিটি বাড়িতে কড়া নাড়তে হবে বলে জেলা পরিষদের সদস্যদের জানানো হয়েছে। তাঁদের কী প্রয়োজন, কোন বিষয়গুলো নিয়ে তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়, এলাকায় কোন পরিকাঠামো হলে ভাল হয় তা জেলা পরিষদের সদস্যদের জানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব চাইছে রাজ্য সরকার, জেলা প্রশাসন যা কাজ করছে তার বাইরেও জেলা পরিষদ নিজেরা চা বাগানে পরিষেবা প্রদান করুক। এ ভাবে কাজ হলে আসন্ন লোকসভা ভোটে তার সুফল মিলবে বলেই তৃণমূলের নেতাদের দাবি।
সোমবার পদ্মশ্রী প্রাপক করিমুল হক এবং এশিয়াডে সোনাজয়ী স্বপ্না বর্মণকে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের ‘প্রজেক্ট অ্যাম্বাসেডার’ ঘোষণা করা হয়েছে। সে উপলক্ষ্যে হওয়া অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ। জেলা পরিষদ সদস্যদের তিনি বলেন, “নতুন বছরে অগ্রাধিকার থাকবে চা বাগান ও আদিবাসী সমাজ। তাঁ প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছতে হবে। নিয়ম করে যেতে হবে।’’
আদিবাসী সমাজে যে বিজেপির প্রভাব বাড়ছে তা আগাম আশঙ্কা করেছিল তৃণমূল। জলপাইগুড়িতে বিজেপির আদিবাসী মুখ, চা শ্রমিক নেতা জন বার্লাকে ভোটের আগে পুরনো মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পরেও ডুয়ার্সে দলের ফলাফল যথেষ্ট ভাল বলে দাবি বিজেপি নেতাদের। বিজেপির জলপাইগুড়ির পর্যবেক্ষক জে পি নাড্ডা প্রায় প্রতি মাসে জেলার বাগানে এসে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে দাবি স্থানীয় নেতাদের। সেই জনসংযোগের সুফল ভোটের বাক্সে বিজেপি কুড়িয়েছিল বলে মনে করেন তৃণমূল নেতাদের কেউ কেউ।