ফের ধোঁয়ার গুঞ্জন শহরে

রবিবার রাতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধোঁয়ার চাদরের ঢেকে গিয়েছিল শিলিগুড়ি। সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা সোমবার দিনভর শিলিগুড়িবাসীর মুখে মুখে ফিরেছে। ধোঁয়ার উৎস নিয়ে ছড়িয়েছে জল্পনাও। রাতের দিকে ফের চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় ধোঁয়া নিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৮ ০৪:১৮
Share:

রবিবার রাতে এমনই ধোঁয়া ভরেছিল শহর। নিজস্ব চিত্র

সোমবার রাতেও ধোঁয়া নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়াল শিলিগুড়ি শহরে। সেবক রোড, দুই মাইল, স্টেশন ফিডার রোড এলাকায় ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে এবং পোড়া গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে বলে বহু বাসিন্দাই টেলিফোনে বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ শুরু করেন। বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে রাস্তাগুলি’র ছবি ছড়াতে থাকে। রাত সাড়ে ৮টা পর থেকে ধোঁয়ার খবর চাউর হয় সর্বত্র। খবর পৌঁছায় শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের কাছেও। মেয়র বলেন, ‘‘এ দিন তেমন কোনও ঘটনা শুনিনি। সোশ্যাল সাইটে এ সব ছড়াচ্ছে। এই সময় জঙ্গলে দাবানল হয়। তা থেকেই বাতাসে ধোঁয়া ছড়াতে পারে। তবে বিষয়টি পরিষ্কার নয়। অযথা বাসিন্দাদের এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়া বা গুজব ছড়ানোটা উচিত নয়।’’

Advertisement

রবিবার রাতে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধোঁয়ার চাদরের ঢেকে গিয়েছিল শিলিগুড়ি। সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা সোমবার দিনভর শিলিগুড়িবাসীর মুখে মুখে ফিরেছে। ধোঁয়ার উৎস নিয়ে ছড়িয়েছে জল্পনাও। রাতের দিকে ফের চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় ধোঁয়া নিয়ে। তাই শঙ্কিত শহরবাসীর দাবি, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে রূপরেখা তৈরি করুক প্রশাসন। কোনও কারণে ফের এমন ঘটলে শহরবাসী যাতে নিরাপদ থাকেন সেই ব্যবস্থাও করা হোক।

শিলিগুড়ির পরিবেশপ্রেমীদের সংগঠন ‘বসুন্ধরা’র মুখপাত্র সুজিত রাহা বলেন, ‘‘ঘটনা হালকা চালে নিলে হবে না। সব দফতর মিলে একটা রূপরেখা তৈরি করতে হবে। এমন অঘটন হলে শহরবাসীরা কোথায়, কাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন সেটাও জনসমক্ষে জানিয়ে দিতে হবে। না হলে গুজব ছড়াবে। আতঙ্ক বাড়বে।’’

Advertisement

ঘটনাচক্রে, শিলিগুড়ি মহকুমা প্রশাসন বাসিন্দাদের আর্জি মেনে বিভিন্ন দফতরের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছে। শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক সিরাজ দানেশ্বর বলেন, ‘‘রবিবার শিলিগুড়ি অনেকটা সময়ে ধোঁয়াচ্ছন্ন ছিল। তা নিয়ে শহরে উদ্বেগ ছড়িয়েছিল। প্রশাসনের তরফে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মত নেওয়া হবে।’’ রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদও চাইছে, দ্রুত সব দফতরকে নিয়ে একটি সমন্বয় বৈঠক হোক। তাঁরা চাইছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা কেন্দ্রকে শক্তিশালী করা হোক। যাতে এ ধরনের ঘটনার সময়ে শহরবাসীর পাশে দাঁড়াতে পারে ওই কেন্দ্রের কর্মী-আধিকারিকরা।

শিলিগুড়ি নাগরিক সংগঠনের মুখপাত্র রতন বণিক বলেন, ‘‘রবিবার রাত ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বহু চেষ্টা করেও দুর্যোগ মোকাবিলা কেন্দ্রের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। পুলিশ-প্রশাসন-বন দফতর, দমকল, সকলেই ‘দেখছি’ বলেছেন। তাতেই রাত ১১ টা বেজে গিয়েছে।’’

সিআইআইয়ের উত্তরবঙ্গ শাখার কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সঞ্জিত সাহা বলেন, ‘‘বিদেশে দাবানলের জেরে ধোঁয়া, তাপমাত্রা বেড়ে গেলে শহরবাসীকে নিরাপদে থাকার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। শিলিগুড়িতেও সরকারি-বেসরকারি, সব স্তরেই পরিকাঠামো তৈরি করাতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন