স্ত্রী-পুত্রের সঙ্গে। —নিজস্ব চিত্র
আগে থেকেই যেন প্রস্তুত ছিলেন সবাই। কারও হাতে সবুজ আবির। কারও হাতে বাজি। কেউ ব্যান্ড পার্টি নিয়ে তৈরি। ফল প্রকাশ হতে শুরু হতেই চার দিকের দখল নিয়ে নেয় তৃণমূল। সবুজ আবিরে ছেয়ে যায় আকাশ। অনেক দূর থেকেও শুধু ব্যান্ড পার্টির আওয়াজ ভেসে আসছিল।
পার্থবাবু কখনও ছুটে যাচ্ছেন গণনাকেন্দ্রের ভিতরে। কখনও বাইরে সমর্থক-নেতাদের মাঝে। ব্যবধান যত বাড়ছিল, ততই উদ্বেল হয়ে উঠছিলেন তিনি। নেতাদের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করছিলেন। কখনও ছোট ছেলেকে কোলে তুলে নিয়ে আনন্দ ভাগ করছিলেন। মঙ্গলবার কোচবিহার উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায় বিজেপি প্রার্থী হেমচন্দ্র বর্মনকে চার লক্ষের বেশি ব্যবধানে পরাজিত করেছেন। যে ব্যবধান তাঁর প্রত্যাশার থেকেও বেশি ছিল। তিনি বলেন, “জয় আসবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম। কিন্তু ব্যবধান এতটা হবে তা ভাবিনি। মানুষের ওই ভালবাসা ভাবতে পাচ্ছি না। মানুষের জন্যেই কাজ করতে চাই। আগামীতে জেলার উন্নয়নে নানা কাজ করব। দল ও দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে উন্নয়নের রূপরেখা তৈরি করা হবে।” তিনি বলেন, এই জয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই সম্ভব হয়েছে। রবীন্দ্রনাথবাবুও বলেন, “বিরোধীরা কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। জয়ের ব্যবধান সব কথা বলে দিচ্ছে। আমরা খুব খুশি।”
এ দিন সকাল সকালই পার্থবাবু সহ দলের নেতা-কর্মীরা ভিড় করেন কোচবিহার শহরে থাকা গণনাকেন্দ্র পলিটেকনিক কলেজের সামনে। পার্থবাবু গণনাকেন্দ্রের ভিতরে চলে যান। নেতা-কর্মীরা বাইরে দলের ক্যাম্পে অপেক্ষা করছিলেন। রবীন্দ্রনাথবাবু চেয়ার নিয়ে গিয়ে গণনাকেন্দ্রের গেটের বাইরে অপেক্ষা শুরু করেন। সকাল সাড়ে ৮ টার পর থেকে ভোটের গতি বাইরে বেরোতে শুরু করে শুরু হয়ে যায় উচ্ছ্বাস। একে একে উদয়ন গুহ, হিতেন বর্মন সহ দলের অন্য বিধায়করাও হাজির হন সেখানে। সকাল ১০টা গড়াতেই শুরু হয় যায় আবির খেলা।
দলের নেতা-কর্মীরা তো বটেই পার্থবাবুর পরিবারের লোকেরাও সেখানে হাজির হয়ে আনন্দে মেতে ওঠেন। পার্থবাবুর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কাদেবী এবং ছোট ছেলে প্রাচুর্য চলে যান গণনাকেন্দ্রের সামনে। তাঁদের নিয়েও আনন্দে মেতে ওঠেন সমর্থকরা। চারদিকে সবুজ আবির খেলা শুরু হয়। পার্থবাবু আনন্দের মধ্যেই আগামীতে কী কাজ করবেন, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন। তিনি জানান, আগামীতে সাবেক ছিটমহলের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করবেন তিনি। এ ছাড়া, জেলার সার্বিক উন্নয়নে শিক্ষা, স্বাস্থ্য নিয়েও নানা পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। কোচবিহার বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এলাকা। সীমান্তের মানুষের কথা সংসদে তুলে ধরার ইচ্ছের কথা জানান পার্থবাবু।