সচেতনতা বাড়াতে প্রচারে রেল পুলিশ।—ফাইল চিত্র।
ভিন রাজ্য থেকে কাজ করে বাড়ি ফিরছিলেন কাকা-ভাইপো। চলন্ত ট্রেনের মধ্যে মাদক খাইয়ে তাঁদের সর্বস্ব লুঠ করা হল বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে আনন্দ বিহার এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরায়।
সোমবার ভোরে মালদহ টাউন স্টেশন ট্রেনটি পৌঁছনোর পরে ঘটনা জানাজানি হতেই হইচই পড়ে যায়। পরে রেলপুলিশ ওই দুই রেলযাত্রীকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে ভর্তি করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। চলন্ত ট্রেনের মধ্যে মাদক খাইয়ে লুঠ কিংবা চুরি ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে বলে অভিযোগ। ফলে ট্রেনে যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। মালদহের যাত্রী সুরক্ষা কমিটির সদস্য নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি বলেন, “যাত্রী সুরক্ষার নামে রেল কর্তৃপক্ষ ভাড়া বাড়াচ্ছে। অথচ নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। প্রায়ই ট্রেনের মধ্যে চুরি, ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটছে।” ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে রেল পুলিশ।
রেল পুলিশ জানিয়েছে, এদিন ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ মালদহ টাউন স্টেশন পৌছায় দিল্লি গামী আনন্দ বিহার এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনের সাধারণ কামরায় দেখা যায় দুই যাত্রীকে। জানা গিয়েছে, তাঁরা হলেন রফিকুল শেখ ও সাবির শেখ। তাঁদের বাড়ি ঝাড়খন্ডের পাকুরের দরাজ গ্রামে। সম্পর্কে কাকা-ভাইপো। মাস দু’য়েক আগে কাশীতে রং মিস্ত্রির কাজে গিয়েছিলেন কাকা-ভাইপো। এ দিন তাঁরা বাড়ি ফিরছিলেন। পাকুর স্টেশনে নামার কথা ছিল তাঁদের। ভাগলপুর স্টেশনের আগে অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবক তাঁদের সঙ্গে ভাব জমায়। তারপরে তাঁদের বিস্কুট খেতে দেওয়া হয়। তারপরেই জ্ঞান হারান কাকা-ভাইপো। তাঁদের দাবি, নগদ চার হাজার টাকা, দুটি মোবাইল ফোন, এবং ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায় ওই দুই যুবক। রফিকুল বলেন, “আমাদের সঙ্গে অনেকক্ষণ ধরে গল্প করেছিল ওই দুই যুবক। পরে আমাদের দুটি বিস্কুট খেতে দেয় তারা। তারপরে আমাদের কিছু মনে নেই। এখন দেখছি আমাদের সমস্ত কিছু লুঠ হয়েছে।”
মাস সাতেক আগে গৌড় এক্সপ্রেসে এরকমই একটি চুরির কবলে পড়েছিলেন মালদহের দুই বিধায়ক। সে বার রেল পুলিশ বিধায়কদের হারিয়ে যাওয়া সামগ্রী উদ্ধার করেছিল। তবে বারবার করে চলন্ত ট্রেনে চুরি, লুঠের ঘটনায় আতঙ্কিত রেলযাত্রীরা রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মালদহের জিআরপি-র আইসি কৃষ্ণগোপাল দত্ত বলেন, “আমরা ওই ঘটনার সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছি। ওই দুই যাত্রী সুস্থ হলে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তাঁর আশ্বাস।