জলপাইগুড়ি হাসপাতাল

চিকিৎসা করাতে এসে হয়রানির নালিশ

কোমরে ব্যথা৷ বুধবার সকাল সকাল তাই স্বামীর সঙ্গে রানিনগর থেকে জলপাইগুড়ি হাসপাতালের আউটডোরে ছুটে এসেছিলেন জ্যোৎস্না দাস৷ চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করে দেখার পর আলট্রা সোনোগ্রাফি করার পরামর্শ দিলেন৷ সঙ্গে সঙ্গেই জোৎস্নাদেবীকে নিয়ে হাসপাতালেই আলট্রা সোনোগ্রাফি করাতে ছুটলেন তার স্বামী সুবল দাস৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৫১
Share:

ঘটনা ১: কোমরে ব্যথা৷ বুধবার সকাল সকাল তাই স্বামীর সঙ্গে রানিনগর থেকে জলপাইগুড়ি হাসপাতালের আউটডোরে ছুটে এসেছিলেন জ্যোৎস্না দাস৷ চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা করে দেখার পর আলট্রা সোনোগ্রাফি করার পরামর্শ দিলেন৷ সঙ্গে সঙ্গেই জোৎস্নাদেবীকে নিয়ে হাসপাতালেই আলট্রা সোনোগ্রাফি করাতে ছুটলেন তার স্বামী সুবল দাস৷ কিন্তু সেখানে তাদের রিকুইজিশন ফর্মে আলট্রাসোনোগ্রাফির তারিখ দেওয়া হল ২৭ মে৷ অর্থাৎ প্রায় তিনমাস পর৷ যা দেখে চোখ কপালে ঠেকে গিয়েছ সুবলবাবু ও জ্যোৎস্নাদেবীর৷

Advertisement

ঘটনা ২: নাক দিয়ে মাঝে মধ্যেই রক্ত পড়তে থাকায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি হলদিবাড়ি থেকে জলপাইগুড়ি হাসপাতালের আউটডোরে ডাক্তার দেখাতে আসেন মানিক হক সরকার৷ চিকিৎসক তাকে এক্স রে ও রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ দেন৷ হাসপাতালে এক্স রে ওইদিনই হয়ে যায় তাঁর৷ কিন্তু রিপোর্ট চাইলে বলা ১৫ ফেব্রুয়ারি দেওয়া হবে৷ তা নিতে বুধবার সকাল সকাল তিনি যখন হাসপাতালে পৌঁছোন তখন তাকে জানানো হয় বিকাল পাঁচটার পর তা দেওয়া হবে৷ অগত্যা সারাদিন হাসপাতালেই বসে থাকতে হয় তাঁকে। আর রক্ত পরীক্ষা? মানিকবাবু বলেন, ‘‘এক্স রে করার পরই রক্ত পরীক্ষার জন্য যাই৷ কিন্তু সেখান থেকে ডেট দেওয়া হয়েছে ১৬ ফেব্রুয়ারি৷’’ বৃহস্পতিবার ফের তাঁকে হলদিবাড়ি থেকে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে আসতে হবে রক্ত পরীক্ষা করাতে৷

জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ চিকিৎসার জন্য যান৷ শুধুমাত্র শহর বা শহরাঞ্চলই নয়, এরমধ্যে প্রচুর রোগী দূর-দূরান্ত থেকে আসেন৷ কিন্তু সরকারি পরিষেবা নিতে প্রতিদিনই তাদের ঠিক এভাবেই হয়রানি হতে হয় বলে অভিযোগ৷ তাদের অভিযোগ, যত দিন যাচ্ছে ততই এই সমস্যা বাড়ছে৷ যার জেরে বাইরে টাকা খরচ করে পরীক্ষা করাতে বাধ্য হচ্ছেন অনেক রোগীই৷ প্রতিদিনই এই ঘটনা চলতে থাকায় ক্ষোভ বাড়ছে রোগী ও তাদের আত্মীয়দের মধ্যে৷ তাদের একাংশের অভিযোগ, এই অব্যবস্থার জেরে হাসপাতালে ক্রমশ সক্রিয় হয়ে উঠছে দালাল চক্র৷ অথচ, সব কিছু বুঝে শুনেও নীরব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ৷

Advertisement

কেন আলট্রা সোনোগ্রাফির জন্য একজন রোগীকে প্রায় সাড়ে তিন মাস পর ডেট দেওয়া হচ্ছে কিংবা কেনই বা এক্স রে রিপোর্ট দেওয়া কিংবা রক্ত পরীক্ষাও দেরিতে করা হচ্ছে তা নিয়ে কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে৷ তবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার অবশ্য সাফ বলেন, ‘‘এটা সম্পুর্ণ বেনিয়ম হচ্ছে৷ কারও যদি আজকে আলট্রা সোনোগ্রাফির প্রয়োজন হয়, আর তাকে সাড়ে তিনমাস পর ডেট দেওয়া হয় তাহলে তার চিকিৎসার প্রয়োজন কি? জলপাইগুড়ি হাসপাতালে সব পরিকাঠামোই রয়েছে৷ তারপরও ঠিক কোন উদ্দেশ্যে এমনটা হচ্ছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব৷’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement