ঠাঁই নেই, ঠাসাঠাসি করে শুয়ে থাকছেন রোগীরা

হাসপাতাল থেকে স্কুল, শিল্প থেকে পরিবেশ, উত্তরবঙ্গে কার কী হাল, তাই নিয়ে এই প্রতিবেদন। আজ নজর  স্বাস্থ্য পরিষেবায়হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে বর্তমানে শয্যা সংখ্যা ৩৮০। হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল বিভিন্ন ওয়ার্ড ও সেখান থেকে মূল ভবনে যাতায়াতের পথে মেঝেতে রোগীদের রেখে চিকিৎসা চলছে।

Advertisement

রাজু সাহা

শামুকতলা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৬
Share:

সিঁড়ির পাশে জায়গা মিলেছে রোগীদের। নিজস্ব চিত্র

আলিপুরদুয়ার জেলা হাসাপাতালে যেন ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই অবস্থা। জেলা হাসপাতালে মোট শয্যা সংখ্যা ৩৮০। কিন্তু প্রায় তিন গুণ রোগীকে ভর্তি করতে হচ্ছে। এর ফলে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অতিরিক্ত রোগীদের মেঝেতে, সিঁড়ির পাশে, বারান্দায় ঠাসাঠাসি ভাবে রেখে চিকিৎসা করতে হচ্ছে। কোনও সময় একটি শয্যায় দু’জন রোগীকে থাকতে দেখা যাচ্ছে।

Advertisement

হাসপাতাল কর্তাদের কথায় পরিকাঠামো উন্নত করে জেলা হাসপাতালে উন্নীত করার পর রোগীর চাপ তিন গুণ বেড়েছে। শয্যার ঘাটতি রয়েছে বলে রোগীদের তো আর চিকিৎসা না করিয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া যায় না। তা ছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ রয়েছে, হাসপাতালে আসা রোগীকে ফেরনো যাবে না কোনও ভাবে। সে ক্ষেত্রে সকলকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে বাধ্য হয়েই বাড়তি রোগীদের এ ভাবে রাখতে হচ্ছে। এই ঘটনায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী এবং স্বাস্থ্যকর্তারা।

সমস্যা মেটাতে গত মাসে সৌরভবাবু হাসপাতাল সুপার ও অন্য সদস্যদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন। সৌরভবাবু এ দিন সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘‘আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভাল চিকিৎসা মিলছে তাই রোগীদের চাপ বাড়ছে। শয্যার সমস্যা রয়েছে। দ্রুত সমস্যা মেটাতে মেল ওয়ার্ডের পাশেই একটি অতিরিক্ত ঘর বানিয়ে সেখানে কিছু শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। পূর্ত দফতরের কাছে এর জন্য সমস্ত কাগজপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে সমস্যার কথা জানিয়ে আরও একটি ভবন নির্মাণের জন্য আর্জি জানানো হয়েছে।’’

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে বর্তমানে শয্যা সংখ্যা ৩৮০। হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল বিভিন্ন ওয়ার্ড ও সেখান থেকে মূল ভবনে যাতায়াতের পথে মেঝেতে রোগীদের রেখে চিকিৎসা চলছে। কুমারগ্রামের যুবক নিতাই দাস বলেন, ‘‘আমার স্ত্রীকে পেট ব্যথা নিয়ে প্রথমে কামাখ্যাগুড়ি ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখান থেকে গত সোমবার এখানে ভর্তি হই। চার দিন ধরে এ ভাবেই মেঝেতে পড়ে রয়েছে আমার স্ত্রী।’’ শুধু নিতাইবাবুর স্ত্রী নন এই এখন জেলা হাসপাতালের সর্বত্র।

মানবিক মুখের রাতুল বিশ্বাস বলেন, ‘‘শয্যা না পেয়ে মেঝেতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা।’’ নতুন বিল্ডিং আর কর্মীনিয়োগ না হলে আখেরে জেলা হাসপাতালে পরিষেবা ভেঙে পড়বে। জেলা হাসপাতালে উন্নীত হওয়ার দরুন অন্যত্র রেফারের সুযোগও কমেছে ফলে রুগীর চাপ বাড়ছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রোগীর চাপ এতটাই বেশি যে মেল, ফিমেল, আইসোলেশন ওয়ার্ড ছাড়াও যাতায়াতের পথে মেঝেতেও অস্থায়ী শয্যায় চিকিৎসা চলছে। হাসপাতাল সুপার চিন্ময় বর্মণ বলেন, ‘‘সকলেরই ভালভাবে চিকিৎসা পাচ্ছেন। শয্যার কিছু সমস্যা রয়েছে সেটা দ্রুত মেটানোর হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন