ভিন রাজ্যে ভয় ২

ফোন বাজলেই বুক ঢিপঢিপ করে

ময়নাগুড়ির বৌলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মসিন রায় বলেন, ‘‘আমার ছেলে অনেকদিন থেকেই গুজরাতে থাকে৷ সেখানে রঙের কাজ করে৷ রাজস্থানের ঘটনার পর ছেলেকে নিয়ে চিন্তায় রয়েছি৷ কখনও কখনও মনে হয়ে এখানে চলে এলেই ভাল৷’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১৬
Share:

একসঙ্গে: রবিবার ফুরফুরা শরিফের ডাকে কালিয়াচক থেকে সৈয়দপুর পর্যন্ত আফরাজুলকে খুনের প্রতিবাদে মিছিলে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বহু মানুষ যোগ দেন। নিজস্ব চিত্র

জলপাইগুড়ি জেলার বহু যুবক কাজের জন্য রয়েছেন ভিন রাজ্যে। রাজস্থানের ঘটনার জেরে তাঁদের নিয়ে চিন্তা বাড়ছে তাদের পরিজনদের৷

Advertisement

জানা গিয়েছে, এই জেলার বেশিরভাগ যুবকই কেরালাতে থাকেন৷ অনেকে আবার রয়েছেন দিল্লি, গুজরাত কিংবা রাজস্থানে সহ অন্য কোনও রাজ্যে৷ কিন্তু রাজস্থানের ঘটনার পর ওই যুবকদের পরিজনদের অনেকেই চাইছেন তারা যেন বাড়ি ফিরে আসেন৷

ময়নাগুড়ির বৌলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মসিন রায় বলেন, ‘‘আমার ছেলে অনেকদিন থেকেই গুজরাতে থাকে৷ সেখানে রঙের কাজ করে৷ রাজস্থানের ঘটনার পর ছেলেকে নিয়ে চিন্তায় রয়েছি৷ কখনও কখনও মনে হয়ে এখানে চলে এলেই ভাল৷’’

Advertisement

কিন্তু বাড়ি ফিরে এলে খাবেন কী? বাড়ি ফিরে এলে চলবে এমন করে? ভিন রাজ্যে কাজ করেন এমন এক শ্রমিকের মা যেমন বললেন, ‘‘বৌমা অন্তঃসত্ত্বা। ছেলে বাইরে কাজ করে। তার টাকাতেই সংসার চলে। এখন সে ফিরে এলে এখানে কী কাজ পাবে? কিন্তু প্রতি দিন রাতে বুক ঢিপ ঢিপ করে। কোনও বাজে খবর আসবে না তো।’’ তাঁর বৌমা বললেন, ‘‘ফোনের দিকে তাকাতে ভয় লাগে। যদি খারাপ খবর আসে।’’

আর একটি পরিবারের কথায়, ‘‘বাইরে এমনিতেই কাজের চাপ বেশি। ঝুঁকিও বেশি। সারা দিন কাজ করার পরে অনেকে খাবারটুকুও ঠিক মতো পান না। অনেকে টাকা জমানোর চেষ্টায় নিজেই কষ্ট করে থাকেন। তার উপরে যদি এই সব উপদ্রব শুরু হয়, আমরা কোথায় যাব?’’ একটি পরিবারের কথায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অাফরাজুলের পরিবারকে তিন লাখ টাকা দেওয়ায় তাঁরা শান্তি পেয়েছেন। কারণ, তাতে বোঝা যাচ্ছে, তাঁদের পাশে রাজ্য প্রশাসন রয়েছে।’’

বেরুবাড়ির মলিন রায় আবার বলেন, ‘‘আমার ভাই কেরালাতে রয়েছে৷ সেখানে কোনও সমস্যা নেই৷ কিন্তু রাজস্থানের ঘটনার পর চিন্তায় পড়ে গিয়েছি।’’

ফিরে এলে দিন চলবে না। এই চিন্তা রয়েছে। তাই প্রতিদিন যোগাযোগ করছেন। এখন উত্তর ভারতে কড়া শীত। সেই ভয়ের সঙ্গেই যোগ হয়েছে আরও উৎকণ্ঠা। অনেকেই বলছেন, সামনে শীতের ছুটিতে শ্রমিকেরা কেউ কেউ বাড়ি আসবেন। তখনই তাঁদের সঙ্গে খোলামেলা কথায় বোঝা যাবে পরিস্থিতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন