মৃতদের নামও মাস্টাররোলে

সুকল বাস্কে, গোকুল টুডু কিংবা নারাণ হাঁসদা। দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের বাদ আঙিনা গ্রামের ওই তিন জন মৃত্যুর পরেও জীবিত রয়েছেন পঞ্চায়েতের ১০০দিনের কাজের পেমেন্টের মাস্টার রোলে।

Advertisement

অনুপরতন মোহান্ত

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৪৮
Share:

সুকল বাস্কে, গোকুল টুডু কিংবা নারাণ হাঁসদা। দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের বাদ আঙিনা গ্রামের ওই তিন জন মৃত্যুর পরেও জীবিত রয়েছেন পঞ্চায়েতের ১০০দিনের কাজের পেমেন্টের মাস্টার রোলে।

Advertisement

গোকুলবাবু মারা গিয়েছেন প্রায় ১০ বছর আগে। ডেথ সার্টিফিকেটে তার মৃত্যুর তারিখ ২০০৭ সালের ২৭ এপ্রিল। সুকলবাবু মারা গিয়েছেন ২০১৪ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। নারাণবাবুর মৃত্যু হয়েছে ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর। অথচ ওই তিন জনই ১০০দিনের কার্যসূচিতে পঞ্চায়েতের জৈবসার তৈরি প্রকল্পে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে উপভোক্তা হয়ে কাজ করেছেন। তাঁদের নামে পঞ্চায়েত থেকে হাজারের উপর টাকা পেমেন্টের মাস্টাররোল তৈরি হয়েছে।

ঘটনাটি কুমারগঞ্জ ব্লকের বাম-বিজেপি পরিচালিত সমজিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাদ আঙিনা এলাকায়। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ভুয়ো মাস্টার রোল বানিয়ে মজুরির টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ তুলে বাসিন্দারা সরব হয়েছেন। অভিযুক্ত পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধান, আরএসপির ধরিত্রী রায় বলেন, ‘‘এ সব আমার জানা নেই। অভিযোগ ঠিক নয়।’’

Advertisement

জেলাশাসক সঞ্জয় বসু বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কুমারগঞ্জের বিডিও দেবদত্ত চক্রবর্তীও একই কথা জানান। পঞ্চায়েতের বোর্ডের শরিক তথা বিজেপির উপপ্রধান নমিতা হেমব্রমের দাবি, ‘‘প্রধান আমাদের এড়িয়ে নিজেদের লোক নিয়ে সব কাজ করেন। অনিয়ম হলে দায় প্রধানের।’’

মৃত সুকল, গোকুলবাবুদের আত্মীয় রামকৃষ্ণ বাস্কে মঙ্গল টুডু বাবলু হাঁসদাদের অভিযোগ, কেবল তাঁদের বাবা কাকাই নন, এলাকার অন্তত ৩০ জন মৃত বাসিন্দাকে ভুয়ো উপভোক্তা (বেনিফিসিয়ারি) বানিয়ে প্রকল্পের লক্ষাধিক টাকা নয়ছয় করেছে সমজিয়া গ্রামপঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি ডেথ সার্টিফিকেট হাতে নিয়ে মৃত ব্যক্তিদের আত্মীয়রা কুমারগঞ্জের বিডিওকে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাঁরা আগামী সোমবার বালুরঘাটে জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়ে নথিপত্র সহ লিখিত অভিযোগ জানাবেন। ব্লক অফিস সূত্রের খবর, মৃত ব্যক্তির নামে ভুয়ো কাজের মাস্টার রোল তৈরি করে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ফেলে তুলে নেওয়া হয়। তদন্ত হলে বড়সড় দুর্নীতি ধরা পড়বে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন