বিধি বাঁচাতে হরেক পথ, সুরক্ষা শিকেয়

নৌকাঘাট মোড় হয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে যাওয়ার পথে পড়বে পেট্রোল পাম্পটি। শীতের দুপুরে শিলিগুড়ি শহরের রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা। হঠাৎ করে বাইকে করে এলেন এক যুবক। পাম্পকর্মী তেল ভরা শুরু করলেন। হেলমেটের বালাই নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:২০
Share:

পাম্প ছাড়াই তেল মিলছে শিলিগুড়ির একটি পাম্পে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

নৌকাঘাট মোড় হয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে যাওয়ার পথে পড়বে পেট্রোল পাম্পটি। শীতের দুপুরে শিলিগুড়ি শহরের রাস্তাঘাট অনেকটাই ফাঁকা। হঠাৎ করে বাইকে করে এলেন এক যুবক। পাম্পকর্মী তেল ভরা শুরু করলেন। হেলমেটের বালাই নেই। প্রশ্ন করলে, পাম্পকর্মীদের বক্তব্য-‘‘বাচ্চা ছেলে। পাশেই থাকে।’’

Advertisement

ঝংকার মোড় থেকে জলপাই মোড়ে যাওয়ার সদা ব্যস্ত বর্ধমান রোড। একের পর বাইক, স্কুটি ঢুকছে বাঁ পাশের পেট্রোল পাম্পে। কেউ কেউ আবার থমকে যাচ্ছেন পাম্পের গেটে। বাইকের হ্যান্ডেল বা স্কুটির ডিকি খুলে মাথায় হেলমেট চাপিয়ে ‘সিসিটিভি’ জোনে ঢুকে তেল ভরে ফের তা গাড়িতে ঝুলিয়ে বার হয়ে যাচ্ছেন। পাম্পকর্মীরা জানান, বাইরে কে কী করছেন তা তো বলতে পারব না। পাম্পের গেটের ভিতরে হেলমেট ছাড়া তেল মিলবে না। শিলিগুড়ি জংশনের একটি পেট্রোল পাম্প। এক তরুণী স্কুটি নিয়ে এলেন। সিট উল্টে হেলমেট হাতে নিয়ে তেল ভরলেন। এরপর চুল ঠিকঠাক করে, সানগ্লাস লাগিয়ে হেলমেট পায়ের কাছে রেখে চলে গেলেন।

অনেকটা একই ছবি, ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাইকারি বাজার লাগোয়া পেট্রোল পাম্পের। হেলমেট ছাড়া কিছুটা ঢুকেই এর-ওঁর থেকে হেলমেটে চেয়ে মাথায় পরে গাড়িতে তেল ঢালছেন চালকরা। শহরের ভিতরের পাম্পগুলির তুলনায় লাগোয়া এলাকায় পাম্পে এই প্রবণতা বেশি দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

পাম্পকর্মীদের দাবি, ‘‘সকলকেই হেলমেট পরতে বলা হয়। অনেকে তর্ক জুড়ে দেন। কিছুক্ষেত্রে তেল দেওয়া হয় না। কিছু সময় ঝামেলা এড়াতে তেল দিয়েও দেওয়া হয়।’’

শহরের বাসিন্দাদের বক্তব্য, ‘‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ বিষয়টি অনেকটাই আইন বাঁচানোর লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। তেল নেওয়ার সময়টুকুতে কোনওরকমে হেলমেট মাথায় রাখলেও হল। বাকি সময় দরকার নেই। পুলিশ প্রথমে জোরদার প্রচার করলেও খুব বেশি কড়া হতে দেখা যায়নি। তাহলে সুরক্ষা কবজ হিসেবে হেলমেটের ব্যবহার আর হল কোথায়?’’ যদিও পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচার দাবি ‘‘হেলমেট পরে যাঁরা তেল নেন তাঁদের সংখ্যাই বেশি। দু’একটি ক্ষেত্রে অন্যরকম হতে পারে। বিষয়টি দেখছি।’’

শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় ৩৬টি পেট্রোল পাম্প রয়েছে। প্রতিটি পাম্পেই সিসিটিভি রয়েছে। গত জুলাই মাসে কলকাতার পর শিলিগুড়িতেও ‘নো হেলমেট নো পেট্রোল’ বিধি চালু করা হয়েছে। প্রথমদিকে প্রচারের পাশাপাশি বিভিন্ন পাম্পে গিয়ে পুলিশকে খোঁজখবর নিতেও দেখা গিয়েছিল। নর্থবেঙ্গল পেট্রোল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শ্যামল পাল চৌধুরী বলেন, ‘‘বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটছে ঠিকই। সিসিটিভি ফুটেজও তো পরীক্ষা করা হচ্ছে। পাম্প মালিকদের বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন