পরিশ্রম: সাবেক ছিটের বাসিন্দাদের দিনযাপন। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
কাজ নেই। ইতিউতি ঘুরেও সারাদিনে খাওয়ার টাকাই রোজগার করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের। এ পারে আসার সময় জমানো টাকা বাক্সবন্দি করে নিয়ে এসেছিল তাঁরা। ব্যাঙ্কে গচ্ছিত সেই টাকাই তুলে তুলে দিন চলছে ওঁদের।
শুক্রবার দলবেঁধে সাবেক ছিটমহলের দিনহাটা ক্যাম্পের বাসিন্দারা হাজির হয়েছিলেন কোচবিহারের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ের বাড়িতে। সেখানের তাঁদের অবস্থার কথা জানিয়ে কিছু একটা স্থায়ী কাজের ব্যবস্থার দাবি করেছেন তাঁরা। সাংসদের মাধ্যমে বিদেশমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের অনেকেই বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার থাকার ঘর করে দেবে। সেই সঙ্গে আমাদের কিছু একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিলে ভাল হয়। না হলে তো বেঁচে থাকাই কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে।” সাংসদ পার্থপ্রতিমবাবু বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “সংসদে বিষয়টি তুলে ধরব। যাতে তাঁদের স্থায়ী কর্মসংস্থানের ব্যাপারেও উদ্যোগী হয় কেন্দ্রীয় সরকার।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, দেখতে দেখতে দেড় বছর পার হয়ে গিয়েছে ছিটমহল বিনিময়ের। তার পরেই বাংলাদেশে ভারতীয় ভূখণ্ডে থাকা বাসিন্দারের অনেকেই এপারে চলে আসেন। দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ ও হলদিবাড়ি তিনটি ত্রাণশিবিরে তাঁদের রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে ওই সংখ্যা ছিল ৯২১ জন। সরকারের তরফে তাঁদের অস্থায়ী ভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হয়। তাঁদের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। পরে তাঁদের রেশনের ব্যবস্থা করা হয়। পরিবার পিছু ৩০ কেজি চাল, ৫ কেজি সর্ষের তেল, ৫ কেজি ডাল, পাঁচ লিটার কেরোসিন তেল, দু’কেজি নুন এবং ১ কেজি দুধের গুঁড়ো প্যাকেট দেওয়া হয়। ওই রেশনে মাসভর তাঁদের সংসার চলে না বলেই দাবি বাসিন্দাদের। সে জন্য কাজের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ান তাঁরা। একশো দিনের কাজ কখনও মেলে, কখনও পাওয়া যায় না। অনেকে দিনভর ঘুরে দিনমজুরের কাজও জোটাতে পারেন না।
সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দা প্রদীপ বর্মন, মিজানুর রহমানরা বলেন, “খুব কষ্টে দিন কাটছে। স্থায়ী ঘর দেওয়ার কথা শুনছি। সেই সঙ্গে আমাদের কাজের দরকার। এখন যা রেশন পাচ্ছি তা দিয়ে পনেরো দিনও যায় না। বাকি দিনগুলি আধপেটা খেয়ে থাকতে হয়।”