প্রায় ৬ বিঘা আবাদি জমিতে পুকুর খোঁড়ার অভিযোগ উঠল কালিয়াচক ২ পঞ্চায়েত সমিতির কংগ্রেসি সভাপতির স্বামী দিলীপ মণ্ডলের বিরুদ্ধে। প্রশাসনের কাছে তা নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তৃণমূলের মোথাবাড়ি বিধানসভা কমিটির সভাপতি মহম্মদ নজরুল ইসলাম। তাঁর অভিযোগ, শুধু ওই জমিতেই নয়, গোটা ব্লক জুড়েই একাধিক জমিরই চরিত্র পরিবর্তন না করে বেআইনি ভাবে পুকুর খুঁড়ে সেই মাটি বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। দিলীপবাবু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, দিলীপবাবুর স্ত্রী তৃণমূলের বশ্যতা স্বীকার না করাতেই তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে শাসক দল। তৃণমূল যে অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াচক ২ ব্লকের উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাগজানটোলা গ্রামে প্রায় ৬ বিঘা জমিতে পুকুর খোঁড়ার কাজ শুরু হয়েছে। আর এই পুকুর খোঁড়া নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। তৃণমূলের অভিযোগ, ভাগজানটোলা গ্রামের ওই জমিতে সারা বছরই নানা ফসল হয়। কিন্তু দিলীপবাবু সেখানে বেআইনি ভাবে পুকুর খুঁড়ছেন। আরও দাবি, পুকুর খুঁড়ে মাছ চাষের কথা বলা হলেও আসলে মতলব মাটি বিক্রি করা। তাঁদের দাবি, ব্লক জুড়ে আগেও এ ভাবে পুকুর খোঁড়া হয়েছিল এবং সেখানে কোনও মাছ চাষ না করে ফেলে রাখা হয়েছে।
ব্লক ভূমি সংস্কার দফতরের একাংশ কর্মীর যোগসাজসেই এ সব বেআইনি কারবার চলছে বলেও তাঁদের অভিযোগ। মহম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘ভাগজানটোলা গ্রামের মানুষ আমার কাছে দল বেঁধে এসে জানিয়েছেন যে, প্রায় ৬ বিঘা জমির চরিত্র পরিবর্তন না করে সেখানে বেআইনি ভাবে পুকুর খোঁড়া হচ্ছে। তাই আমি ঘটনার তদন্ত চেয়ে ব্লক ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক সহ জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি।’’
দিলীপবাবু অবশ্য দাবি করেন, ওই ৬ বিঘা জমি ৬ জন রায়তের এবং সেই জমিতে কোনও চাষ হয় না। নিচু ওই জমি তাঁদের কাছ থেকে পাঁচ বছরের জন্য লিজে নিয়েই পুকুর খোঁড়া হচ্ছে এবং সেখানে মাছ চাষ করা হবে। ভূমি সংস্কার দফতর থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতিও নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে এ সব করা হচ্ছে।’’ জমির মালিকরা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। জেলা ভূমি সংস্কার আধিকারিক দেবতোষ মণ্ডল বলেন, ‘‘অভিযোগের তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হবে।’’
মোথাবাড়ির কংগ্রেসি বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘আসলে আমাদের দলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শাসকদলের কাছে বিক্রি হয়নি বলেই তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে ফাঁসানোর চক্রান্ত চলছে। এসবই শাসকদলের চাপের রাজনীতি।’’ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রভাতী মণ্ডলও বলেন, ‘‘সবই শাসকদলের চক্রান্ত।’’ নজরুল সাহেব অবশ্য বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত হলে সব পরিস্কার হবে। এখানে দলের কোনও বিষয়ই নেই।’’