গরমাগরম: ঠেলাগাড়িতে ভাজা হচ্ছে মালপোয়া। নিজস্ব চিত্র
একটা সময় ছিল, যখন দোলের দু’দিন মালদহের বাড়ি বাড়ি থেকে বেরতো মালপোয়ার ঘ্রাণ। ময়দা, সুজি, চিনি, নারকেল, কাজু, কিসমিস ও ক্ষীর দুধে গুলে তেলে ভেজে মাপোয়া তৈরির রেওয়াজ এখন অনেকটাই ফিকে। বেশির ভাগ পরিবারই এখন বাজার থেকে কেনা মালপোয়াতেই নিয়মরক্ষা করে থাকে। শহরের মিষ্টির দোকানগুলি তো বটেই এমনকী বিভিন্ন রাস্তার পাশে পাশে ঠেলাগাড়ি করে বিক্রি হচ্ছে সেই মালপোয়া। প্রতি কেজি বিকিয়েছে ১২০ টাকা দরে।
এক সময়ে মালদহ ছিল বিহারের পূর্ণিয়া জেলার মধ্যে। এখন পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে থাকলেও বিহারের বেশ কিছু সংস্কৃতি মালদহে রয়ে গিয়েছে। তাই, এখানে দোল দু’দিন। প্রথম দিনের দোল ‘দেবদোল’ নামেই পরিচিত এবং পরের দিন হোলি। ‘দেবদোলে’ শুধু আবির খেলা হয়, আর পরের দিন রং। পাশাপাশি এই দু’দিনই মালদহে মালপোয়া তৈরি করে খাওয়ার রেওয়াজও রয়েছে। কয়েক বছর আগে পর্যন্তও সেই ট্র্যাডিশনই বজায় ছিল। কিন্তু এখন বাজারের তৈরি মালপোয়াই ভরসা।
জেলার বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ কমল বসাক বলেন, ‘‘আগে আমরা আবির, রং নিয়ে খোল-করতাল বাজিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরতাম। প্রত্যেক বাড়ি থেকে নিয়ম করে আমাদের প্রত্যেককে মালপোয়া পরিবেশন করা হতো। প্রতি বছর শুধু মালপোয়া খেতেই এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করতাম। কিন্তু এখন সে সব স্মৃতি। দুধের স্বাদ ঘোলের মেটানোর মতো বাজারের কেনা মালপোয়াতেই এখন সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।’’