কেন ভাঙা পড়েনি তৃণমূল কার্যালয়, প্রশ্ন বাসিন্দাদের

ক্ষতিপূরণ অনেকে পাননি অথচ তাঁদের ঘর দোকান ভাঙা পড়েছে। আবার কেউ ক্ষতিপূরণের টাকা আনতে গিয়ে ফিরে এসে দেখেন তাঁর দোকান ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০১:৫৯
Share:

ক্ষতিপূরণ অনেকে পাননি অথচ তাঁদের ঘর দোকান ভাঙা পড়েছে। আবার কেউ ক্ষতিপূরণের টাকা আনতে গিয়ে ফিরে এসে দেখেন তাঁর দোকান ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বস্তুত, শিলিগুড়ির তিনবাতি থেকে উত্তরকন্যা পর্যন্ত এশিয়ান হাইওয়ের অংশে প্রস্তাবিত রাস্তার জায়গা থাকা বিভিন্ন দোকান, বাড়ি সমস্তই গত এক সপ্তাহে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। শুধু রাস্তার অংশে থাকা তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয় এখনও ভাঙা হয়নি বলে অভিযোগ। তা নিয়েই এলাকায় নানা প্রশ্ন উঠেছে। শাসক দলের কার্যালয় বলেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে কি না সেই প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

কেন তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় ভাঙার ক্ষেত্রে বাড়তি সময় দেওয়া হবে তা নিয়েও বাসিন্দাদের একাংশ ক্ষুব্ধ। এমনকী রবিবারও ওই এলাকায় রাস্তার জায়গা পরিষ্কার করতে ভাঙার কাজ করেছে এশিয়ান হাইওয়ে তৈরির কাজে যুক্ত পূর্ত দফতরের নির্দিষ্ট বিভাগ। অথচ এ দিনও তৃণমূলের ওই কার্যালয়টি ভাঙা হয়নি কেন তা নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন। যদিও শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ব্যবসায়ী, বাসিন্দারা।

রাস্তা নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র নির্মল মণ্ডল বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের ক্ষতিপূরণ দিয়েই রাস্তার জায়গা থাকা দোকান, বাড়ি ভাঙা হচ্ছে। ওই এলাকায় সমস্ত দোকান, বাড়িই ভেঙে ফেলা হয়েছে। রাজনৈতিক দলের ওই কার্যালয় ভাঙা হয়নি এমনটা হওয়ার কথা নয়।’’ ওই আধিকারিক জানান, এলাকায় কয়েকটি মন্দির রয়েছে। সেগুলি ভাঙার আগে বাসিন্দাদের জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে বলে সময় দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া বাকি সমস্ত কিছুই ভেঙে ফেলা হয়েছে বলেই তিনি জানেন।

Advertisement

যদিও বাস্তবে এ দিনও ওই দলীয় কার্যালয়টি রয়েই গিয়েছে। কার্যালয়ের একটি দরজা কেবল খোলা হয়েছে। দলেরই লোকজন সেটি খুলেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ‘‘আমরা কয়েকজন ক্ষতিপূরণ আনতে গিয়েছিলাম। এসে দেখি আমাদের দোকান ভাঙা হয়েছে। পরিবারের লোকেরা অনুরোধ করেছিল তখন কোনও কথা পূর্ত দফতর শোনেনি। অথচ শাসক দলের কার্যালয় বলে এখন সময় দেওয়া হচ্ছে। পূর্ত দফতর পক্ষপাতিত্ব করছে।’’ তাদের দাবি, সকলের ক্ষেত্রেই নিয়ম এক হওয়া উচিত। তৃণমূল কংগ্রেসের ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি ব্লকের সভাপতি দেবাশিস প্রমাণিক বলেন, ‘‘দলের বৈঠকে যোগ দিতে সকলেই কলকাতায় ছিলাম। অঞ্চল সভাপতিরাও ছিলেন না। এশিয়ান হাইওয়ে হোক এটা তো আমরাই চাই। ওই এলাকায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থাকলে সেটি দলের কর্মীরাই দ্রুত ভেঙে সরিয়ে দেবেন।’’ বিরোধী সিপিএমের নেতা দিলীপ সিংহ মনে করেন সকলের ক্ষেত্রে একই নিয়ম হওয়া উচিত। তিনি বলেন, ‘‘ওই এলাকায় অন্যান্যদের আরও কয়েকটি দলীয় কার্যালয়ও ভাঙা হয়েছে। অথচ শাসক দল বলে তাদের বাড়তি সুবিধা দেওয়া হবে, দেরি করে ভাঙা হবে এটা ঠিক নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন