অসুস্থকে মার কেন, ক্ষোভ পুলিশকর্মীকে

মানসিকভাবে অসুস্থ দুই ব্যক্তিকে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ উঠল পুলিশ এক সহকারী সাব ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে। বুধবার সকালে শিলিগুড়ি থানার সেবক রোডের পানিট্যাঙ্কি মোড়ে ঘটনাটি ঘটেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬ ০৮:০৫
Share:

পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ বাসিন্দাদের। িনজস্ব চিত্র।

মানসিকভাবে অসুস্থ দুই ব্যক্তিকে রাস্তায় ফেলে মারধরের অভিযোগ উঠল পুলিশ এক সহকারী সাব ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে।

Advertisement

বুধবার সকালে শিলিগুড়ি থানার সেবক রোডের পানিট্যাঙ্কি মোড়ে ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার প্রতিবাদে প্রায় ঘণ্টাখানেক পথচারী, স্থানীয় ব্যবসায়ী, বাসিন্দা ও গাড়ি চালকেরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। দোষী পুলিশ অফিসারের শাস্তির দাবিতে, ওই মোড়ের একটি ট্রাফিক পোস্টটি ঘেরাও করে রাখা হয়। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মী পোস্টটির ভিতর ঢুকে পড়লে তাঁকে ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। পরিস্থিতি খারাপ দিতে যেতে থাকায় শিলিগুড়ি থানার আইসি দেবাশিস বসু ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। ওই দুই মানসিকভাবে অসুস্থদের একজনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আরেকজনের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত অফিসারের নাম আবু তালেব। তিনি হাসপাতাল লাগোয়া চিলড্রেন পার্ক এলাকায় থাকা এডিসিপি (পূর্ব) দফতরে কর্মরত। সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ পানিট্যাঙ্কি মোড় এলাকায় গিয়েছিলেন। ওই এলাকায় এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে একটি টোটোর মত গাড়ি ফুল, কাগজ, নানা ধরনের নম্বর প্লেট, হর্ন দিয়ে সাজিয়ে ঘোরাফেরা করেন। হাতে একটি হকিস্টিকও রাখেন। এ দিন তিনি ট্রাফিকের লাল আলো না দেখে এগোতে গিয়ে ওই অফিসারকে ধাক্কা মারেন বলে অভিযোগ। তাতে পুলিশ অফিসারটি ক্ষেপে গিয়ে তাঁকে নামিয়ে হকি স্টিক দিয়ে মারতে থাকেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

তা দেখে এলাকায় ঘোরাফেরা করতে থাকা আরেক মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিও এগিয়ে আসেন। তাকে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে স্বেচ্ছায় হাতে লাঠি নিয়ে ট্রাফিক কন্ট্রোল করতে দেখা যায়। একটু বয়স্ক ওই ব্যক্তিকে ধাক্কা মারলে তিনি মাটিতে পড়ে জখম হন বলে অভিযোগ। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এই দৃশ্য দেখেই স্থানীয়েরা এগিয়ে এসে প্রতিবাদ শুরু করেন। বহু গাড়ির চালক, অফিসের কর্মীরাও এগিয়ে আসেন। এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়ে যায়। তাঁরা বলেন, ‘‘ওঁরা মানসিকভাবে অসুস্থ হতে পারেন। কিন্তু দুই জনই তো মানুষ। তাদের এভাবে মারধর মেনে নেওয়া হবে না।’’ বেগতিক টের পেয়ে পুলিশ অফিসার ট্রাফিক পোস্টের ভিতরে ঢুকে পড়েন। সেখানেই তাঁকে ঘিরে ধাক্কাধাক্কি হয় বলে অভিযোগ। রাস্তা অবরোধ শুরু হয়। ট্রাফিক পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারেরা কোনওমতে সামলাতে থাকে। কিন্তু পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। হাজারখানেক মানুষ বিক্ষোভে সামিল হন। শেষে থানা থেকে বড় পুলিশ বাহিনী আসে। তবে লিখিতভাবে কেউ কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি।

পুলিশ সূত্রের খবর, বিকালেই শিলিগুড়ি থানার আইসি’র কাছে গোটা ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। তার পরেই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার অবশ্য কোনও কিছু বলতে চাননি। পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘লিখিত কোনও অভিযোগ নেই। তবে বিষয়টি আমরা দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন