হোম পালাতে গিয়ে ডুব, হল না শেষরক্ষা

জলপাইগুড়ির অনুভব হোমের এই কিশোরীদের আবার সেই হোমেই ফেরত পাঠাচ্ছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জেনেছে, রবিবার দুপুরে হোমে মাংস ভাত হয়েছিল। তাই খেয়ে খেলতে গিয়েছিল সকলে। সেখান থেকেই পালায় পাঁচ কিশোরী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৪২
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

পুলিশ গিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিল দুই নাবালিকার। তাদের ঠাঁই হয়েছিল সরকারি হোমে। দুই নাবালিকাই রবিবার রাতে ঠিক করে, হোম থেকে পালিয়ে তাদের প্রেমিকদের কাছে যাবে। কিন্তু রাস্তায় ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই তারা নদীর জলে গলা পর্যন্ত ডুবিয়ে অপেক্ষা করেছিল প্রায় ছ’ঘণ্টা। তাদের সঙ্গে ছিল আরও তিন কিশোরী। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সকলেই ধরা পড়ে যায়।

Advertisement

জলপাইগুড়ির অনুভব হোমের এই কিশোরীদের আবার সেই হোমেই ফেরত পাঠাচ্ছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জেনেছে, রবিবার দুপুরে হোমে মাংস ভাত হয়েছিল। তাই খেয়ে খেলতে গিয়েছিল সকলে। সেখান থেকেই পালায় পাঁচ কিশোরী। তাদের দু’জনের বয়স চোদ্দোর সামান্য বেশি। তিন জন সতেরোর উপরে। তাদের নেতৃত্ব দেয় যে দুই কিশোরী, তাদের একজনের বাড়ি মানিকগঞ্জে, এক জনের শিলিগুড়িতে।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে কিশোরীরা হোমের কাছাকাছিই ছিল। তারপরে করলার বাঁধের কাছে চলে যায়। ততক্ষণে পুলিশও জেনে গিয়েছে, তারা পালিয়েছে। সে খবর যে জানাজানি হয়ে যাবে, তা-ও আঁচ করেছিল ওই কিশোরীরা। বাঁধের কাছে জঙ্গলে কিছু ক্ষণ লুকিয়ে ছিল তারা। তার আগেই ধরা পড়ে যায় একজন। পুলিশ অনুমান করে, বাকিরাও ওই এলাকাতেই রয়েছে। তন্নতন্ন করে তারা তল্লাশি শুরু করে। তারপরে আর লুকোনোর জায়গা না পেরে শেষ পর্যন্ত চার কিশোরী করলার জলেই নেমে যায়। ঠান্ডা লাগে। মশা কামড়ায়। পোকা মাকড়ও ছিল। তারপরেও তারা ঘণ্টা তিন-চার জলে গলা ডুবিয়ে বসে থাকে। কিন্তু ভোরের দিকে পুলিশ আর খুঁজবে না ধরে নিয়ে জল থেকে উঠে পালানোর সময় ধরা পড়ে যায় চার জন৷

Advertisement

তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে চোখ কপালে উঠে যায় পুলিশকর্তাদের৷ ওই কিশোরীদের লক্ষ্য ছিল কোনওমতে শিলিগুড়ি যাওয়ার৷ এক কিশোরীর হাতে ছিল সোনার আংটি। তা বিক্রি করে যা আসবে, তা দিয়ে কয়েকদিন শিলিগুড়িতে কাটিয়ে দু’জন নিজেদের প্রেমিকের কাছে চলে যাবে বলে ঠিক করে৷ বাকিরা ভেবেছিল, নিজেদের পছন্দ মতো জায়গায় যাবে। হোমের কো-অর্ডিনেটর দীপশ্রী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুলিশের থেকে জানতে পারলাম, রাতভর ওরা গলা জলে দাঁড়িয়েছিল৷ কী ভাবে এটা ওরা করতে পারল তা ভেবেই অবাক লাগছে৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন