পুলিশের আশ্বাসে ভয় কাটল প্রৌঢ় শিক্ষকের

ঝক্কির আশঙ্কায় পকেটমার হওয়ার পরেও থানায় যেতে চাননি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। যদিও, সর্বস্ব খোয়ানো মাস্টারমশাইয়ের কাছে ত্রাতা হয়ে উঠল পুলিশ কর্মীরাই। দিনের শেষে পুলিশের ভূমিকার দরাজ প্রশংসাও করলেন তিনি।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৩৪
Share:

কাটা পকেট। — নিজস্ব চি‌ত্র

ঝক্কির আশঙ্কায় পকেটমার হওয়ার পরেও থানায় যেতে চাননি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। যদিও, সর্বস্ব খোয়ানো মাস্টারমশাইয়ের কাছে ত্রাতা হয়ে উঠল পুলিশ কর্মীরাই। দিনের শেষে পুলিশের ভূমিকার দরাজ প্রশংসাও করলেন তিনি।

Advertisement

বাসের মধ্যেই কখনও পকেটমার প্যান্টের পকেটে ছুরি চালিয়ে দিয়েছে তা প্রথমে বুঝতেও পারেননি উত্তর দিনাজপুরের দেহুচি হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক। বর্তমানে তিনি কালিয়াগঞ্জে থাকেন। সেখান থেকেই বাসে চেপে শিলিগুড়ি পৌঁছেছিলেন দুপুর একটা নাগাদ। মহানন্দা সেতুর কাছে বাস থেকে নেমে হিলকার্ট রোড ধরে এগোতে থাকেন। মহানন্দা সেতু লাগোয়া পানিট্যাঙ্কি ট্র্যাফিক গার্ডের অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকর্মীদের কাছে ঠিকানা জানতে চান। পুলিশকর্মীরা দেখেন তার প্যান্টের পকেটের নীচের অংশ ছেঁড়া। সে দিকে দেখাতেই মাথায় হাত পড়ে অবসরপ্রাপ্ত প্রাক্তন শিক্ষকের। পকেটে প্রায় সাতশো টাকা ছিল, তার সবটাই উধাও। বুঝতে পারেন ভিড় বাসে কেউ তার পকেটের নীচে ব্লেড চালিয়ে, টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পুলিশ কর্মী তাঁকে থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়েরের পরামর্শ দেন। যদিও, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তাতে রাজি হননি। তিনি দাবি করেন, থানায় গেলে ঝক্কি পোহাতে হবে। পুলিশ কর্মীরা নানা ভাবে বোঝালেও, তিনি রাজি হননি। উল্টে দাবি করেন, তার পকেটমার হয়নি। তাঁর মনোভাব বুঝে পুলিশকর্মীরাও জোরাজুরি করেননি। তবে দৃশ্যতই আতঙ্কিত ওই ব্যক্তিকে ট্র্যাফিক গার্ডের অফিসে বসিয়ে জিরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ধাতস্থ হয়ে পুলিশকর্মীদের কাছে তিনি কবুল করেন, পকেটে থাকা সব টাকা খোয়া যাওয়ায় বাড়ি ফেরার উপায় নেই।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক জানিয়েছেন, শিলিগুড়িতে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার সময়ে তাঁকে ফের ট্র্যাফিক গার্ডের অফিসে যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়। দুপুর তিনটে নাগাদ তিনি গেলে সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) সুরেন্দ্র সিংহ নেগি তাঁকে চা খাইয়ে, এক সিভিক ভল্যান্টিয়ারের বাইকে চাপিয়ে শিলিগুড়ি তেনজিং নোরগে বাসস্ট্যান্ডে পাঠিয়ে দেন। বাসভাড়াও দিয়ে দেন। বিকেলে বাড়ি পৌঁছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বলেন, ‘‘নানা ঝক্কি এড়ানোর জন্য থানায় অভিযোগ দায়ের করতে চাইনি। কিন্তু পুলিশ কর্মীরা যে ভাবে নিজেরা এগিয়ে এসে আমাকে সাহায্য করেছেন, তা অভাবনীয়। পুলিশের এমন সহযোগিতা থাকলে সমাজটাই বদলে যাবে।’’ শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা অবশ্য বলেন, ‘‘এটাই পুলিশের কাজ।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন