ময়নাগুড়ির জোড়া খুন রবারের জন্যই

ময়নাগুড়ি জোড়া খুনের কিনারা করল পুলিশ৷ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চক্রের সবাইকেই গ্রেফতার করা হল৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:২৫
Share:

গ্রেফতার খুনে জড়িত সন্দেহে সকলেই। — নিজস্ব চিত্র

ময়নাগুড়ি জোড়া খুনের কিনারা করল পুলিশ৷ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চক্রের সবাইকেই গ্রেফতার করা হল৷

Advertisement

গত ৩ সেপ্টেম্বর ময়নাগুড়ি বাইপাসে অসম মোড় ও ইন্দিরা মোড়ের মাঝে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে দু’টি মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা৷ মৃত দু’জনের হাতে থাকা ট্যাটুর সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়ে পুলিশ জানতে পারে ওই দু’জনের নাম অজয় সিং ও জয়প্রকাশ সিং ৷ পেশায় লরি চালক। দুজনেরই বাড়ি উত্তর প্রদেশে ৷ তাদের লরিতে থাকা রাবার লুঠের উদ্দেশ্যেই দু’জনকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে৷

জোড়া খুনের ঘটনায় ৯ সেপ্টেম্বর পঙ্কজ জৈন নামে এক ব্যবসায়ীকে সল্টলেক থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ তার ঠিক একদিন পর শিলিগুড়ি থেকে তাপস পাল ও সায়ক দত্ত নামে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার পুলিশ মধ্যমগ্রাম থেকে এই চক্রের আরও চার পান্ডা মফিজ আলি, আবুল কাসেম, মহম্মদ মুস্তাকিন ও আমির হোসেন নামে চার জনকে গ্রেফতার করে ৷ এদের মধ্যে মফিজ ও আবুল লরি চালক ও খালাসিকে শ্বাসরোধ করে খুন করে বলে পুলিশের দাবি৷

Advertisement

পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, লরিতে করে প্রায় ষোলো লক্ষ টাকার রবার নিয়ে অজয় সিং ও জয়প্রকাশ সিং আগরতলা থেকে লুধিয়ানা যাচ্ছিলেন ৷ কোচবিহারের বক্সিরহাট সীমানা দিয়ে এ রাজ্যে ঢোকার আগেই অসমের বাসিন্দা মফিজ ও আবুল তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে লরিতে চেপে যায় ৷ তবে বক্সিরহাট চেকপোস্টে সিসি টিভি থাকায় ওই এলাকাটি তারা বাসে চেপে পাড় হয় ৷ এরপর চ্যাংরাবান্ধা হয়ে ময়নাগুড়িতে এসে মফিজ ও আবুল লরি চালক ও খালাসিকে খুন করে৷

পুলিশ জানিয়েছে, খুনের পর দেহ রাস্তার ধারে ফেলে মফিজ ও আবুল লরি নিয়ে শিলিগুড়ি যায়৷ সেখান থেকে কলকাতায় টেলিফোনে যোগাযাগ করে চোরাই মালের ব্যবসায়ী পঙ্কজের সঙ্গে৷ পঙ্কজ রবার নিতে রাজি হয়৷ পঙ্কজের নির্দেশেই তারপর তাপস ও সায়ক লরি থেকে রবার নামিয়ে প্রথমে একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে রাখে৷ তারপরই লরিটিকে ইসলামপুরের কাছে পরিত্যক্ত অবস্থায় রেখে আসে মফিজরা৷ এরপর পঙ্কজের কাছে রবার পৌঁছে দিতে শিলিগুড়ি থেকে আরেকটি লরিতে তা তুলে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হয় মফিজ ও আবুল৷ ইতিমধ্যেই তাদের সঙ্গে যোগ দেন এই চক্রের আরও দুই পান্ডা করণদিঘির বাসিন্দা মহম্মদ মুস্তাকিম ও আমির হোসেন৷

কিন্তু তারা কলকাতা পৌঁছানোর আগেই পুলিশ পঙ্কজকে ধরে ফেলে৷ এই অবস্থায় রবার নিয়ে কলকাতা সংলগ্ন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে থাকে তারা৷ শেষ পর্যন্ত মধ্যমগ্রাম থেকে চারজনকেই ধরে ফেলে পুলিশ৷ তবে তারা যে লরিতে রবার তুলেছিল, সেই লরিটির হদিশ মেলেনি৷ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি জানিয়েছেন, হেফাজতে নেওয়ার পর জেরা করে ওই রাবার ভর্তি লরি তারা কোথায় রেখেছে তা জানার চেষ্টা করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন