পুলিশ ফিরলেই কি ফের সংঘর্ষ, শঙ্কা মোজমপুরে

প্রায় এক মাস ধরে চলছে এলাকা দখলের সংঘর্ষ। এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হল না কালিয়াচকের মোজমপুরে। সকাল থেকে রাত পালা করে পুলিশি টহল চলছে গোটা এলাকায়। পুলিশের বুটের শব্দে গত চারদিন ধরে এলাকায় গোলাগুলির কোনও শব্দ শোনা না গেলেও বাসিন্দারা স্বস্তিতে নেই। রাত কাটছে আতঙ্কেই। গ্রামবাসীর আশঙ্কা, পুলিশী টহল উঠে গেলেই ফের শুরু হবে সংঘর্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:৪০
Share:

প্রায় এক মাস ধরে চলছে এলাকা দখলের সংঘর্ষ। এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হল না কালিয়াচকের মোজমপুরে।

Advertisement

সকাল থেকে রাত পালা করে পুলিশি টহল চলছে গোটা এলাকায়। পুলিশের বুটের শব্দে গত চারদিন ধরে এলাকায় গোলাগুলির কোনও শব্দ শোনা না গেলেও বাসিন্দারা স্বস্তিতে নেই। রাত কাটছে আতঙ্কেই। গ্রামবাসীর আশঙ্কা, পুলিশী টহল উঠে গেলেই ফের শুরু হবে সংঘর্ষ।

গত এক মাস ধরেই স্থানীয় তৃণমূল নেতা আসাদুল্লা বিশ্বাস ও তাঁরই একসময়ের ঘনিষ্ঠ রিন্টু বিশ্বাসের বিরোধকে ঘিরে উত্তপ্ত মোজমপুর। গত ১০ সেপ্টেম্বর তা চরম আকার নেয়। ওই দিন ভোররাতে দুই গোষ্ঠীর সর্ংঘষে সেলিম শেখ নামে এক ব্যক্তি গুলিতে হয়ে মারা যান। গুলিবিদ্ধ হন আরও দু’জন। নিহত সেলিম শেখের স্ত্রী আরেফা মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের অনুগামী বলে পরিচিত তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য আসাদুল্লা বিশ্বাস-সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। গুলিবিদ্ধ ওয়াহেদ শেখের স্ত্রী সাইমাও তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের অনুগামী বলে পরিচিত রিন্টু বিশ্বাস, তাঁর দুই ভাই এবং তুহুর আলি বিশ্বাস ও তাঁর চার ভাই-সহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর ৩৬ জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করলেও পুলিশ কেবলমাত্র রিন্টুর দুই ভাই ইকবাল আলি বিশ্বাস ও বদরুদ্দিন বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে। অথচ বাকি ৩৪ জন অভিযুক্তকে ধরে নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, মন্ত্রীদের চাপেই নাকি পুলিশ দুই গোষ্ঠীর অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার সাহস পাচ্ছে না। জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। অভিযুক্তেরা সবাই পালিয়ে গিয়েছে। যতদিন না এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে ততদিন মোজমপুরে পুলিশ পিকেট থাকবে।”

Advertisement

তবে পুলিশের আশ্বাসেও স্বাভাবিক ছন্দ ফেরেনি মোজমপুরে। খোদ মোজমপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানই পঞ্চায়েত অফিসে যেতে পারছেন না। ওই পঞ্চায়েত প্রধান আফরোজা বিবি বলেন, “এখন গোলমাল হচ্ছে না ঠিকই, তবে ভয় করছে পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকতে। এখন পুলিশ খুব ঘোরাঘুরি করছে বলে দু’পক্ষের লোকেরাই পালিয়েছে।” তাঁর শঙ্কা, “পুলিশ একটু ঢিলে দিলেই ফের গোলমাল শুরু হয়ে যাবে।” মোজমপুর গার্লস হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা পম্পা দাস বলেন, “স্কুল খোলা আছে। কিন্তু এলাকায় গোলমালের জেরে স্কুলে একশোরও বেশি ছাত্রী আসছে না।” কমে গিয়েছে মোজমপুর এসএসবি হাইস্কুলের হাজিরাও। শিক্ষক-শিক্ষিকারা গেলেও হামলার ভয়ে বহু ছাত্রছাত্রী স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “মোজমপুর শান্তই ছিল। কিছু লোক ফের ওই এলাকাকে অশান্ত করে তুলেছে। পুলিশকে বলেছি যারা অশান্তি সৃষ্টি করছে তাদের গ্রেফতার করুন। তবে যারা এলাকায় নেই তাদের বিরুদ্ধে অযথা মামলা করবেন না।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “প্রশাসনকে বলেছি সব পক্ষকে নিয়ে শান্তি বৈঠক করুন। কারণ মোজমপুর নিয়ে সবার কাছে খারাপ বার্তা যাচ্ছে। পুলিশকে বলেছি যারা মোজমপুরকে অশান্ত করে রেখেছে তাদের গ্রেফতার করুন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন