রাত পোহালেই নতুন বাংলা বছর। তার প্রাক্কালে কোথায় শুভেচ্ছা বিনিময় হবে, তা নয়, শিলিগুড়ির আলোচনার কেন্দ্রে সেই অশোক-গৌতম।
দুই শিবিরের মূল দুটি প্রশ্ন। যা চলছে তাতে পুরবোর্ড কি আর ধরে রাখতে পারবেন অশোক ভট্টাচার্য? নাকি নববর্ষের গোড়াতেই ‘শিলিগুড়ি-মডেল’-এ গড়া বোর্ড ভেঙে গৌতম দেব তার দখল নেবেন?
এমন আলোচনা কারণ, ছোট্ট শহরে কে কোথায় যাতায়াত করেন, তা জানাজানি হতে সময় লাগে না। চাউর হয়েছে, তৃণমূলের তিন নেতার সঙ্গে বিজেপির দুই কাউন্সিলরের একাধিক ঘনিষ্ঠ জনকে পরপর দু’দিন রেস্তোরাঁয় দেখা গিয়েছে। সিপিএমের কয়েক জন নেতার সঙ্গে সরকারি অতিথি নিবাসে তাবড় তৃণমূল নেতাকে ঠান্ডা পানীয় সহযোগে রাত অবধি আলোচনায় দেখা গিয়েছে। সিপিএম কাউন্সিলর দীপায়ন রায় নিজেদের পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগে ইস্তফা দিতে চেয়ে চিঠিও দিয়েছেন। কংগ্রেসের এক কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ জনও ঘনঘন বৈঠক করছেন তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে।
এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার সাতসকালে কংগ্রেসের পুর পরিষদীয় নেতা সুজয় ঘটককে দেখা গেল পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবের বাড়িতে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ছিলেন তিনি। অশোকবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে কিছু দিন আগে ৩ নম্বর বরো চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে যান সুজয়। দু’দিন আগে সেই বরোয় ভোটাভুটিতে কংগ্রেস পাশে থাকা সত্ত্বেও রহস্যজনক ভাবে একটি ভোট কম পেয়ে ড্র করে বামেরা। পরে টসে পদটি জিতে নেয় তৃণমূল। ফলে, সুজয়কে সামনে রেখে, বিজেপির অন্তত এক জনকে পাশে নিয়ে এবং সিপিএমের এক জনকে ইস্তফা দিইয়ে অশোকবাবুর বোর্ডকে সংখ্যালঘু করে দিতে তৃণমূল আসরে নেমেছে বলে অনেকের ধারণা।
অরবিন্দ ঘোষ মারা যাওয়ার পরে পুরসভায় সদস্য সংখ্যা ৪৬। বাম ২২, তৃণমূল ১৮, কংগ্রেস ৪, বিজেপি ২। সিপিএমের এক জন যদি ইস্তফা দেন, তবে বামেরা হবে ২১। সুজয়-সহ কংগ্রেসের তিন এবং বিজেপির এক জনকে পাশে পেলে তৃণমূল টপকে যাবে বামকে (২২)। গৌতম অবশ্য বলছেন, ‘‘সুজয়ের আসা ব্যক্তিগত ও সৌজন্যমূলক।’’ জল্পনা নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘সব কিছু ঘটা করে বলা সম্ভব নয়। সময়ই সব বলে দেবে।’’ মেয়রের পাল্টা দাবি, ‘‘সব ফাঁকা আওয়াজ।’’ দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি (সমতল) শঙ্কর মালাকার বলেন, ‘‘এখনও অবধি আমাদের কেউ দল ছাড়ছেন না।’’