ফের আবর্জনা সাফ করার প্রতিশ্রুতি দলগুলির

ডান থেকে বাম। সমস্ত রাজনৈতিক দলের ইস্তেহারে রয়েছে শহরকে আবর্জনা মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি। আর তাতেই ক্ষুব্ধ মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার বাসিন্দারা। বাসিন্দাদের দাবি, ভোট এলেই নেতা নেত্রীদের শহরকে আবর্জনা মুক্ত করার কথা মনে পড়ে। আর ভোট ফুরোলেই শহরের মধ্যে জমে থাকা নোংরা আবর্জনা ডিঙিয়ে দিনের পর দিন যাতায়াত করতে হয়।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩৪
Share:

ডান থেকে বাম। সমস্ত রাজনৈতিক দলের ইস্তেহারে রয়েছে শহরকে আবর্জনা মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি। আর তাতেই ক্ষুব্ধ মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভার বাসিন্দারা। বাসিন্দাদের দাবি, ভোট এলেই নেতা নেত্রীদের শহরকে আবর্জনা মুক্ত করার কথা মনে পড়ে। আর ভোট ফুরোলেই শহরের মধ্যে জমে থাকা নোংরা আবর্জনা ডিঙিয়ে দিনের পর দিন যাতায়াত করতে হয়। তাই এ বার আর প্রতিশ্রুতি নয়, সত্যিই আবর্জনা মুক্ত শহর চাই বলে স্লোগান তুলেছেন ইংরেজবাজার পুরসভার বাসিন্দারা। এই নিয়ে শুরু হয়ে রাজনৈতিক তরজাও। এমনকী বিদায়ী তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে নোংরা আবর্জনা সাফাই নিয়ে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা।

Advertisement

এই বিষয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘শহরের জঞ্জাল সমস্যার জেরে সাধারণ মানুষ নাজেহাল। দিনের পর দিন রাস্তার ধারে জমে থাকছে নোংরা আবর্জনা। পুরসভা এখনও জঞ্জাল ফেলার জায়গা গড়ে তুলতে পারেনি। এদিকে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য পুরসভায় টাকা পড়ে রয়েছে। এর জবাব পুরবাসীরা এবারের নির্বাচনে দেবেন।’’ শহরের জমে থাকা নোংরা আবর্জনাকে প্রচারের বিষয় করেছে বিজেপিও। বিজেপির জেলার সাধারণ সম্পাদক তথা ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ব্রিটিশ আমলে তৈরি এই পুরসভায় এখনও কোনও আবর্জনা ফেলার জায়গা নেই। পুরসভা শহরের যেখানে সেখানে আবর্জনার পাহাড় করে রাখছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে শহরবাসী বসবাস করছেন।’’

এই বিষয়টি নিয়ে বিদায়ী পুরবোর্ডকে বিঁধছে জেলা কংগ্রেসও। কংগ্রেসের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী তথা পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি বলেন, ‘‘জঞ্জালনগরীতে পরিণত হয়েছে শহর। এই বিষয়ে এতদিন কোনও পদক্ষেপ নেয়নি বিদায়ী পুরবোর্ড। ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য টাকা পুরসভায় এসে বছরের পর বছর ধরে পড়ে রয়েছে। তবু তাঁরা মানুষের সমস্যা মেটাতে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।’’ তিনি জানান, বিষয়টি এ বার পুরপ্রচারে তাঁরা তুলে ধরছেন।

Advertisement

যদিও সমস্যা মেটাতে তৎপর বলে দাবি করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা বিদায়ী চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারয়ণ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য বেশ কিছু জায়গা আমরা চিহ্নিত করেছিলাম। তবে স্থানীয় মানুষের আপত্তি থাকায় তা করা সম্ভব হয়নি। শহর থেকে দুরে একটি জায়গা কেনা হয়েছে। ফলে সমস্যা মেটাতে আমরা চেষ্টা করেছি।’’

ইংরেজবাজার পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ড ভেঙে এবার হয়েছে ২৯টি। পুরসভার প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা সরব ডাম্পিং গ্রাউন্ড নিয়ে। শহরের অলিগলি থেকে মুল রাস্তা সবর্ত্রই জমে রয়েছে নোংরা আবর্জনা। যা ডিঙিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে শহরবাসীকে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দিনের পর দিন ধরে ফেলে রাখা হচ্ছে আবর্জনা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুরসভার তরফ থেকে সংগ্রহ করা হয় আবর্জনা। সেই আবর্জনা জমা করে রাখা হয় বিভিন্ন স্থানে। উল্লেখ্য, বেসরকারি বাস স্ট্যান্ডে ঢুকতেই দেখা যায় রাস্তার মুখে জমা করে রাখা হয়েছে আবর্জনা। শুধু এখানেই নয়, বিএস রোড, সরকারি বাস স্ট্যান্ড, ফুলবাড়ি, বাঁশবাড়ি, গয়েশপুর, মকদমপুর প্রভৃতি এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা যায়।

আর জমে থাকা আবর্জনা দিনের পর দিন জমে থাকার ফলে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ ছড়ায়। মুখে রুমাল দিয়েও এই এলাকাগুলি দিয়ে যাতায়াত করা দায়। স্কুল, কলেজের ছাত্র ছাত্রী, অফিসযাত্রী সকলকেই এমন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। শহরবাসী তপেশ ঘোষ, সুদীপ সাহা প্রমুখেরা বলেন, পুরসভা ভোট এলেই রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছ থেকে জানতে পারি নোংরা আবর্জনা নিয়ে একটি প্রকল্প গড়ে তোলা হবে। সেখানে আবর্জনাগুলি জমা করে সেখান থেকে বৈজ্ঞানিক প্রদ্বতিতে সার তৈরি করা হবে। ফলে শহরে আবর্জনা থাকবে না।এগুলি ভোট বাজারেই কেবল জানতে পারি। বাস্তবে কিছুই হয় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন